নেপালে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে নিহত ১৪

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম
-68bebdf63aaee.jpg)
নেপালে জেন-জিদের বিক্ষোভে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে অন্তত ১৪ জনের নিহত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের নির্বিচার গুলিতে অন্তত ১৪ জনের নিহত হয়।
নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় আজ সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত নয়া বানেশ্বরে জেন-জিদের প্রতিবাদ কর্মসূচির সময় পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন।
চিকিৎসক দীপেন্দ্র পাণ্ডে নিশ্চিত করেছেন যে—জাতীয় ট্রমা সেন্টারে আনা সাতজন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। তিনি জানান, আরও ১০ জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের মাথা ও বুকে গুলি লেগেছে। এ ছাড়া অন্যান্য আঘাতে আহত আরও ২০ জনের বেশি ব্যক্তি চিকিৎসাধীন।
বানেশ্বরের এভারেস্ট হাসপাতালের কর্মকর্তা অনিল অধিকারী জানিয়েছেন, তাঁদের হাসপাতালে তিন আন্দোলনকারী মারা গেছেন। ৫০ জনের বেশি ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে, এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর।
বানেশ্বরের সিভিল হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন চন্দ্র রেগমি বলেন, হাসপাতালটিতে দুজন মারা গেছেন। কেএমসি ও ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষণ হাসপাতালেও একজন করে ব্যক্তি আহত থেকে মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ প্রতিবাদকারীদের ওপর জলকামান, টিয়ার গ্যাস ও তাজা গুলি ব্যবহার করেছে। রাজধানী কাঠমান্ডু ও অন্যান্য বড় শহরে এখনো প্রতিবাদ চলছে।
নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সম্প্রতি দেশটিতে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরকারের আদেশে নিষিদ্ধ হওয়ায় তরুণরা এ বিক্ষোভ শুরু করে।
বিক্ষোভের নেতৃত্বে রয়েছে শিক্ষার্থী ও তরুণ (জেন-জি) প্রজন্ম। বিক্ষোভ দমনে ব্যাপকভাবে জলকামান, টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ব্যবহার করছে নেপালের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরা লাঠি, গাছের ডাল পানির বোতল নিয়ে প্রতিরোধে নেমেছেন। বিক্ষোভে সরকারবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন তারা। বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী জাতীয় পার্লামেন্ট ভবনেও ঢুকে পড়েছেন।
এখন পর্যন্ত রাজধানী কাঠমান্ডুতেই সীমাবদ্ধ আছে বিক্ষোভ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে কারফিউ জারি করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেই নোটিশে বলা হয়েছে আজ স্থানীয় সময় দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত জারি থাকবে কারফিউ। কিন্তু রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ অমান্য করে সড়কে নেমেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
নেপালের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন শীতল নিবাস, ভাইস প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন, রাজপরিবারের প্রধান প্রাসাদ সিংহ দরবার, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসবভন ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নেপালের দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্ট।