
বেইজিংয়ের আকাশজুড়ে তখন সামরিক কুচকাওয়াজের রঙিন আয়োজন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় একসঙ্গে হাজির হয়েছেন তিন নেতা—চীন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু চোখে পড়ার মতো এই দৃশ্যের মধ্যেও, আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে ভিন্ন এক মুহূর্ত।
পাশাপাশি হাঁটছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। হঠাৎ করেই রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খোলা মাইক্রোফোনে ধরা পড়ে তাদের একান্ত আলাপচারিতা। বিষয়বস্তু যেন কল্পবিজ্ঞান ছোঁয়া—মানবদেহ, প্রযুক্তি, দীর্ঘায়ু, এমনকি অমরত্ব।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পূর্তিকে স্মরণ করে আয়োজিত এই কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনও। তিনজনই যখন তিয়েনআনমেন স্কয়ারের মঞ্চের দিকে এগোচ্ছেন, তখনই আলাপের টুকরো টুকরো শব্দ ধরা পড়ে সম্প্রচারে।
রুশ দোভাষীর কণ্ঠে শোনা যায়, “বায়োটেকনোলজি দিন দিন উন্নত হচ্ছে… অঙ্গ প্রতিস্থাপন এখন নিয়মিত ব্যাপার। মানুষ যত বেশি বাঁচে, তারুণ্য যেন ততই ফিরে আসে। এমনকি কেউ কেউ বলছেন, একদিন অমর হওয়াও সম্ভব হতে পারে।”
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কিছুটা হাস্যোজ্জ্বল স্বরে জবাব দেন, “এই শতাব্দীতেই মানুষ ১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারবে—এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন অনেকেই।”
পাশেই ছিলেন কিম জং-উন। কথাগুলো শুনে তিনি হেসে ওঠেন। যদিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি, এই মন্তব্য তার জন্য অনুবাদ করা হয়েছিল কিনা।
এদিকে পুতিনের কণ্ঠ ধরা না পড়লেও পুরো কথোপকথন সম্প্রচার হয় চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিসিটিভি ও সিজিটিএন, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও—রয়টার্স ও এপি সরাসরি তা প্রচার করে।
চীনের সম্প্রচার সংস্থার তথ্যমতে, সেই সংলাপের ফুটেজ অনলাইনে ১৯০ কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে, আর টিভিতে পৌঁছেছে ৪০ কোটির বেশি দর্শকের ঘরে।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পুতিনও স্বীকার করেন, এমন আলোচনা হয়েছিল তাদের মধ্যে। তিনি বলেন, “আমরা আধুনিক চিকিৎসা, প্রযুক্তি এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছিলাম। এসব অগ্রগতি মানুষের জীবনে নতুন আশার দুয়ার খুলছে। ভবিষ্যতের সক্রিয় জীবনযাপন হয়তো আজকের ভাবনার চেয়েও অনেক বিস্তৃত হবে।”