Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলার অভিযোগ রাশিয়ার

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪১ এএম

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলার অভিযোগ রাশিয়ার

এ বছরের শুরুর দিকে তোলা কুর্স্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছবি। ইউক্রেনের কথিত হামলার পর আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানায়, কেন্দ্রটির আশপাশে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ‘স্বাভাবিক’। (ছবি: শামিল ঝুমাতভ/রয়টার্স)

মস্কো অভিযোগ করেছে, ইউক্রেন তাদের স্বাধীনতা দিবসে ডজনখানেক ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার একটি হামলায় পশ্চিম রাশিয়ার কুর্স্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন ধরে যায়। তবে সেখানে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি বলে জানানো হয়েছে।

রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সীমান্ত থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলার ঘটনায় একটি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং একটি রিঅ্যাক্টরের কার্যক্ষমতা অর্ধেকে নেমে আসে। তবে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং তেজস্ক্রিয়তার মাত্রাও বাড়েনি। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, কুর্স্ক প্ল্যান্টের আশপাশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ইউক্রেনের ৯৫টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে, যেগুলো রাশিয়ার এক ডজনেরও বেশি অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আক্রমণ চালায়। উত্তর-পশ্চিমের সেন্ট পিটার্সবার্গসহ বিভিন্ন স্থানে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। লেনিনগ্রাদ অঞ্চলের উস্ত-লুগা বন্দরে আগুন লাগে, যেটি রাশিয়ার বড় জ্বালানি রপ্তানি টার্মিনালগুলোর একটি।

অন্যদিকে ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ৭২টি ইরানি শাহেদ ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়। এর মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী ৪৮টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে একটি রুশ ড্রোন হামলায় দনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে এক নারী নিহত হয়েছেন।

ডনেস্ক অঞ্চল এখন যুদ্ধ ও শান্তি আলোচনা দুটোরই কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। রাশিয়া দাবি করেছে, তারা সেখানে দুটি গ্রাম দখল করেছে। তবে ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ওলেক্সান্দর সিরস্কি জানিয়েছেন, তারা ডনেস্কে তিনটি গ্রাম পুনর্দখল করেছেন।

স্বাধীনতার ৩৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে কিয়েভে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “যখন শান্তির ডাক অগ্রাহ্য করা হয়, তখনই ইউক্রেন এরকমভাবে আঘাত হানে। ইউক্রেন এখনও পুরোপুরি জয়ী হয়নি, কিন্তু কখনো হেরে যাবে না। স্বাধীনতা আমরা নিশ্চিত করেছি। ইউক্রেন ভুক্তভোগী নয়, লড়াকু।”

তিনি আরও বলেন, ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকই হতে পারে যুদ্ধ শেষের সবচেয়ে কার্যকর পথ। যুদ্ধ শেষে বিদেশি সেনাদের উপস্থিতি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ হবে বলেও জানান তিনি।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, “ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কীভাবে রক্ষা পাবে, সেটা রাশিয়ার সিদ্ধান্ত নয়।”

এদিন ইউক্রেন ও রাশিয়া একে অপরের ১৪৬ জন যুদ্ধবন্দি ও বেসামরিক নাগরিককে ফেরত দিয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বন্দি বিনিময়ই দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিরল ক্ষেত্র হয়ে আছে।

রাশিয়া এখন ইউক্রেনের পাঁচভাগের একভাগ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে ২০১৪ সালে সংযুক্ত করা ক্রিমিয়াও রয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লাখো মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়েছে, ধ্বংস হয়েছে অসংখ্য শহর ও গ্রাম।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন