Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ফের রক্ত ঝরল কলম্বিয়ায়, ভয়াবহ দুই হামলায় নিহত ১৮, আহত শতাধিক

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৫, ১১:০১ এএম

ফের রক্ত ঝরল কলম্বিয়ায়, ভয়াবহ দুই হামলায় নিহত ১৮, আহত শতাধিক

কলম্বিয়ায় নতুন করে রক্ত ঝরল ভয়াবহ দুই হামলায়। একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত আঠারো জন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গত কয়েক দশকের মধ্যে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি এমন জটিল অবস্থায় আর কখনও পড়েনি বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। খবর বিবিসির।

পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কালি’র ব্যস্ত একটি সড়কে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ছয়জন নিহত হন, আহত হন অন্তত ৬০ জন। বৃহস্পতিবার আরও আগে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর মেডেলিনের বাইরে গ্রামীণ এলাকায় পুলিশের একটি হেলিকপ্টারকে লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন হামলায় মারা যান ১২ জন।

এ হামলাগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে ভেঙে যাওয়া বিদ্রোহী সংগঠন ফার্কের ভিন্ন ভিন্ন সশস্ত্র অংশকে। এগুলো আগামী নির্বাচনের আগে কলম্বিয়ার ভঙ্গুর শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য নতুন করে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কালির মেয়র আলেহান্দ্রো এদার জরুরি অবস্থা জারি করেছেন এবং সাময়িকভাবে ভারী ট্রাক শহরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, হামলার তথ্য দিলে ১০ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে।

দুটি হামলার পরপরই প্রেসিডেন্ট এবং সেনা নেতৃত্ব নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকেন। সেখানে নাগরিকদের সুরক্ষায় বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে বলে জানানো হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছে, রাষ্ট্র কোনোভাবেই সন্ত্রাসের কাছে নতি স্বীকার করবে না, এসব অপরাধের বিচার হবে আইনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে।

চোখে দেখা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কালি’র মার্কো ফিদেল সুয়ারেজ সামরিক বিমানচালনা স্কুলকে লক্ষ্য করে ওই গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। এতে সাধারণ পথচারীরা নিহত হন, আশেপাশের অনেক ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিমানঘাঁটির কাছে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়, মনে হচ্ছিল আকাশ কেঁপে উঠল।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ একে সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পেছনে রয়েছে মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত ফার্ক গেরিলা নেতা ইভান মরদিস্কো। তার ভাষায়, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এ কাপুরুষোচিত হামলা মূলত মরদিস্কো গোষ্ঠীর মরিয়া প্রতিক্রিয়া, কারণ নিরাপত্তা বাহিনী ভালে দেল কাওকা, কাওকা ও নারিনিও এলাকায় মাদক চোরাচালানের বড় অংশই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে।

পুলিশের হেলিকপ্টারের ওপর ড্রোন হামলার প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো জানিয়েছেন, বিমানটি কোকা গাছ ধ্বংস করার মিশনে ছিল। আকাশে ওড়া অবস্থায় ড্রোন হামলায় সেটি ভূপাতিত হয় এবং তাতে থাকা বারোজন পুলিশ সদস্যই নিহত হন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলের আমালফি এলাকায় বনভূমির উপর দিয়ে কালো ধোঁয়া উড়ছে।

মন্ত্রী সানচেজ জানান, এ হামলা চালিয়েছে ইএমসি গেরিলা গোষ্ঠী, যা বর্তমানে ফার্কের সবচেয়ে বড় ভাঙনধারী অংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী, বিদ্রোহী, আধাসামরিক বাহিনী ও মাদকচক্রের সংঘর্ষে কলম্বিয়ায় সহিংসতা বেড়ে গেছে। ড্রোন হামলাও দিন দিন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। শুধু ২০২৪ সালেই এমন ১১৫টি হামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে, যার অধিকাংশই করেছে অবৈধ সশস্ত্র গোষ্ঠী। গত সপ্তাহেও দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি চেকপোস্টে নৌবাহিনী ও সেনাদের ওপর ড্রোন থেকে বোমা ফেলায় তিন সেনা নিহত হয়েছিলেন।


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন