Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

তেলআবিবের রাস্তায় লাখ মানুষ, গাজার যুদ্ধ থামানোর দাবিতে বিক্ষোভ

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৩ এএম

তেলআবিবের রাস্তায় লাখ মানুষ, গাজার যুদ্ধ থামানোর দাবিতে বিক্ষোভ

তেলআবিবের রাস্তায় নেমে এসেছেন লাখ লাখ মানুষ। গাজার যুদ্ধ থামাতে হবে, বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে হবে—এই দাবিতে রবিবার সন্ধ্যায় জড়ো হয় এক বিশাল জনসমুদ্র। অক্টোবর ২০২৩-এ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে।

সারা দেশে দিনভর ধর্মঘট আর বিক্ষোভ শেষে রাজধানীর তথাকথিত ‘হোস্টেজ স্কয়ারে’ জমায়েত হয় মানুষ। হাত উঁচু করে সবাই একসঙ্গে চিৎকার করেন—“সবাইকে ফিরিয়ে আনো, যুদ্ধ থামাও।” হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম নামের সংগঠন বলছে, শুধু তেলআবিবেই প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন। পুলিশের তরফে এই সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়নি।

সংগঠনের অন্যতম নেতা আইনাভ জানগাউকার (বন্দি সন্তান মাতানের মা) বলেন, “আমরা একটি বাস্তবসম্মত চুক্তি চাই, চাই যুদ্ধের অবসান। আমাদের সন্তানেরা আমাদের প্রাপ্য। ইসরায়েলি সরকার ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধকে অর্থহীন যুদ্ধে পরিণত করেছে।”

রবিবার জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয় একটি ভিডিও বার্তা। সেখানে দেখা যায়, দুর্বল আর শুকিয়ে যাওয়া বন্দি মাতা‌ন জানগাউকার তার পরিবারকে উদ্দেশ করে বলেছেন, তিনি তাদের ভীষণ মিস করছেন। জানানো হয়, গাজায় হামাস এই ভিডিও ধারণ করেছিল, পরে ইসরায়েলি সেনারা তা উদ্ধার করে।

৫০ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী ওফির পেনসো বললেন—“এখনই হয়তো শেষ মুহূর্ত আমাদের হাতে। এর পর আর হয়তো আমরা বন্দিদের ফেরাতে পারব না।”

এরই মধ্যে ইসরায়েলি নিরাপত্তা ক্যাবিনেট গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যা যুদ্ধকে নতুন মোড় দিয়েছে। তবে পরিবারগুলো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছে, প্রয়োজন হলে দেশ অচল করে দেওয়া হবে, কিন্তু প্রিয়জনদের ফিরিয়ে আনতেই হবে, যুদ্ধ শেষ করতেই হবে। সারা দেশে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করেছেন, টায়ারে আগুন দিয়েছেন, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ৩০ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেছেন, এতে হামাস আরও শক্ত অবস্থানে যাবে, বন্দি ফেরত আসবে না, বরং ৭ অক্টোবরের ভয়াবহতা আবারও ফিরে আসবে। অন্যদিকে, বিরোধীদলীয় নেতা বেনি গান্টজ সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, “তারা বন্দিদের পরিবারের ওপর আক্রমণ করছে অথচ প্রায় দুই বছর ধরে সন্তানদের বন্দিদশার দায়ও তাদেরই।”

ইতিমধ্যে মিসর জানিয়েছে, নতুন করে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের জন্য মধ্যস্থতা শুরু হয়েছে। তবে ইসরায়েলের চরমপন্থী মন্ত্রীরা এসব উদ্যোগকে ‘আত্মসমর্পণ’ বলে নিন্দা করছেন।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এ পর্যন্ত অন্তত ৬১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই সাধারণ মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে যাওয়া এবং যুদ্ধের পরোক্ষ প্রভাবে মারা যাওয়া অসংখ্য মানুষ এখনো এই হিসাবের বাইরে রয়ে গেছেন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন