Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে বন্যায় ৩২৭ মৃত্যু, শত শত ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, আরও বড় বন্যার আশঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০১:০৬ পিএম

পাকিস্তানে বন্যায় ৩২৭ মৃত্যু, শত শত ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, আরও বড় বন্যার আশঙ্কা

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২৭ জনে। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুনের জেলা, যেখানে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আহত হয়েছেন আরও ১২০ জন। একদিনেই প্রাণ গেছে দুই শতাধিক মানুষের, তাদের মধ্যে ছিলেন একটি সরকারি হেলিকপ্টারের পাঁচজন ক্রু, যারা ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিতে গিয়ে মোমন্দ জেলায় গিয়েছিলেন। সেখানে তাদের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়।

শাংলা, মানশেহরা, সোয়াত, বাজাউর, বাট্টাগ্রামসহ একাধিক জেলায় প্রাণহানির খবর এসেছে। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেক ঘরবাড়ি ভেসে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্কুল, সেতু আর বিদ্যুৎকেন্দ্র। শুধু সোয়াতেই দুটি স্কুল ধ্বংস হয়েছে। গিলগিট-বালতিস্তান ও আজাদ জম্মু-কাশ্মীরেও প্রাণ গেছে আরও ২১ জনের। সেখানে শত শত ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে খাইবার পাখতুনখোয়া সরকার। বলা হয়েছে, আগস্টের শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চলবে। ইতোমধ্যে এক বিলিয়ন রুপি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সড়ক ও সেতু সংস্কারে বরাদ্দ করা হয়েছে আরও দেড় বিলিয়ন রুপি। প্রাদেশিক গভর্নরের নির্দেশে রেড ক্রিসেন্ট জরুরি সহায়তা কেন্দ্র খুলেছে। এমনকি কর্মকর্তাদের বেতনের একদিনের টাকা কেটে নেওয়ার প্রস্তাবও এসেছে, যাতে ত্রাণ তহবিল বাড়ানো যায়।

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, এই বন্যায় যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা বেদনাদায়ক। তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী, রেসকিউ টিম ও সব সরকারি বাহিনী কাজ করছে। তবে খারাপ আবহাওয়া, ভাঙা রাস্তা আর ক্ষতিগ্রস্ত মোবাইল টাওয়ারের কারণে কাজ এগোচ্ছে ধীরগতিতে। কোথাও কোথাও উদ্ধারকর্মীদের হাঁটতে হাঁটতে দুর্গম গ্রামে পৌঁছাতে হচ্ছে।

বুনের বেশ কয়েকটি গ্রামে একসঙ্গে বহু মানুষ মারা গেছে। কাদার নগর নামের এক গ্রামে একই পরিবারে ৪০ জনকে হারিয়ে বাকি রইল শুধু বাবা আর ছেলে। স্থানীয়রা একসঙ্গে ৫৬ জনের জানাজা পড়েছেন সেখানে। অন্যদিকে বেসোনাই গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, পাহাড় থেকে হু হু করে নামা কালো জলের ঢল দেখে তিনি দৌড়ে মানুষকে সাবধান করেছিলেন, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ আর পালাতে পারেননি।

আকাশে এখনও মেঘ জমছে। আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে, বৃষ্টি চলবে অন্তত ২১ আগস্ট পর্যন্ত। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরও ভূমিধস হবে, নদীর পানি বাড়বে। পাহাড়ি গ্রামগুলোতে অনেকে এখনও আটকে আছেন। কোথাও গাড়ি ভেসে গেছে, কোথাও স্কুল আঙিনা পানিতে ডুবে আছে। শোক আর আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে আছে গোটা অঞ্চল।


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন