Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ল্যামি ও ভ্যান্সের বৈঠক

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০২:০৫ পিএম

ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ল্যামি ও ভ্যান্সের বৈঠক

কেন্টের চেভেনিং হাউসে শুক্রবার জেডি ভ্যান্স (ডানে) ও ডেভিড ল্যামি। এই গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যে ছুটি কাটাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ছবি: কিন চুং/এপি

ব্রিটেনে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। এই বৈঠকে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা হয়।

এই সম্মেলনটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হলো, যখন আগামী শুক্রবার আলাস্কায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ শেষ করতে হলে কিছু ভূমি বিনিময় প্রয়োজন হতে পারে। এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার সকালে স্পষ্ট জানান, ইউক্রেন কোনোভাবেই দখলদারদের কাছে ভূমি ছেড়ে দেবে না।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, পুতিন জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা না করলেও তিনি রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, আলোচনায় ইউক্রেনকে উপেক্ষা করা হতে পারে। পরে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে আলাস্কায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আগ্রহী, তবে পুতিনের অনুরোধে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তুতিও চলছে।

শনিবার টেলিগ্রামে জেলেনস্কি লিখেছেন, যেকোনো শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত আসলে শান্তির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত। এগুলো ফলহীন এবং কার্যকর হবে না।

ল্যামি ও ভ্যান্সের বৈঠক কেন্টের চেভেনিং-এ অনুষ্ঠিত হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে আয়োজিত হয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যায় ল্যামি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, তিনি ভ্যান্স, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাস্টেম উমেরভ এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের সমর্থন ইউক্রেনের পাশে অটল থাকবে এবং ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির জন্য তারা একসাথে কাজ করে যাবেন।

জেলেনস্কি জানান, নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের এই বৈঠক গঠনমূলক হয়েছে এবং ইউক্রেনের মতামত ও শঙ্কা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ডের প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন, যেখানে যুদ্ধবিরতি অর্জনে যৌথ অবস্থান গড়ে তোলার লক্ষ্যে আলোচনা হয়। জেলেনস্কি বলেন, শান্তির পথ নির্ধারণ হবে ইউক্রেনের সঙ্গে এবং শুধুমাত্র ইউক্রেনের সঙ্গেই, এটিই প্রধান নীতি।

শনিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, শান্তির পথ ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে নির্ধারণ করা যাবে না। তারা ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সক্রিয় কূটনীতি, ইউক্রেনকে সহায়তা এবং রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি—এই তিনটি একসাথে কাজ করলে তবেই সফলতা আসবে। তারা এ প্রক্রিয়ায় কূটনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি সামরিক ও আর্থিক সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

শনিবার সকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও জেলেনস্কি ফোনে কথা বলেন। ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, দুই নেতা ট্রাম্পের যুদ্ধ বন্ধের ইচ্ছাকে স্বাগত জানান এবং পুতিনের ওপর চাপ বজায় রাখার বিষয়ে একমত হন। স্টারমার জেলেনস্কিকে ইউক্রেন ও তার জনগণের প্রতি অবিচল সমর্থনের আশ্বাস দেন।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে জেলেনস্কি ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যখন ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের খবর প্রকাশ পায়। শুক্রবার পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক জানান, সংঘাত “স্থবির” হতে পারে।

যদি আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক হয়, তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের পর এটাই হবে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পুতিনের প্রথম সাক্ষাৎ। পুতিনের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল ২০২১ সালের জুনে জেনেভায় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে।


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন