Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

আল জাজিরার বিশ্লেষণ

সরকারি সাইট থেকে মার্কিন সংবিধানের ধারা উধাও?

Icon

সামান্থা পাটারম্যান

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:২১ এএম

সরকারি সাইট থেকে মার্কিন  সংবিধানের ধারা উধাও?

মার্কিন কংগ্রেসের গ্রন্থাগারের ওয়েবসাইটে হঠাৎ সংবিধানের কিছু লেখা দেখা যাচ্ছিল না। বিষয়টি দ্রুতই নজরে আসে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিটে কয়েকজন জানান, সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদের কিছু অংশ সাইটে নেই। এই অনুচ্ছেদে হেবিয়াস করপাসের অধিকার এবং কংগ্রেস ও অঙ্গরাজ্যের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা সম্পর্কিত বিধান রয়েছে। ইন্টারনেট আর্কাইভের ওয়েবব্যাক মেশিনে দেখা যায়, ১৭ জুলাই পর্যন্ত ওয়েবসাইটে পূর্ণ লেখা ছিল, কিন্তু পরে তোলা ছবিগুলোতে ওই অংশ আর পাওয়া যায়নি।

কিছু মানুষ দাবি করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই এসব বিধান সংবিধান থেকে মুছে ফেলেছে। কেউ কেউ থ্রেডসে লিখেন, সরকারি ওয়েবসাইট নীরবে প্রথম অনুচ্ছেদের নবম ও দশম অংশ মুছে দিয়েছে, সংবিধান সংশোধনের কোনো প্রক্রিয়া ছাড়াই। তারা এমনকি অভিযোগ করেন, সবচেয়ে সুরক্ষামূলক ধারাগুলোই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে হেবিয়াস করপাস সীমিত করার শর্ত ও কংগ্রেসের একচেটিয়া শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা উল্লেখ আছে।

আসলে কোনো ওয়েবসাইটে লেখা পরিবর্তন মানে সংবিধান থেকে অংশ বাদ দেওয়া নয়। যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান পরিবর্তন হয় কেবল আনুষ্ঠানিক সংশোধনী প্রক্রিয়ায়। এই প্রক্রিয়া শুরু হয় কংগ্রেস থেকে, প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে দুই–তৃতীয়াংশ ভোটে পাসের পর অঙ্গরাজ্যের তিন–চতুর্থাংশ আইনসভা বা অনুমোদন সম্মেলনের মাধ্যমে তা কার্যকর হয়। জাতীয় আর্কাইভস এবং ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টারের ওয়েবসাইটে পূর্ণ লেখা সবসময় পাওয়া যায়।

বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে কংগ্রেস গ্রন্থাগার এক্স–এ জানায়, ওয়েবসাইটের অনুপস্থিত অংশগুলো কোডিং ত্রুটির কারণে নেই। তারা দ্রুত তা ঠিক করার কাজ শুরু করে। একই সময়ে সাইটে একটি ব্যানারে লেখা হয়, সংবিধান সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে ডেটা সমস্যার কারণে অসুবিধার জন্য দুঃখিত। কয়েক ঘণ্টা পর তারা ঘোষণা দেয়, সমস্যাটি সমাধান হয়েছে এবং অনুপস্থিত অংশগুলো ফের যুক্ত করা হয়েছে। তারা জানান, ডিজিটাল তথ্য হালনাগাদ রাখা তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এবং ত্রুটি চিহ্নিত করার জন্য পাওয়া প্রতিক্রিয়াকে তারা মূল্য দেয়।

প্রথম অনুচ্ছেদে মার্কিন সরকারের আইন প্রণয়নকারী শাখার কাঠামো রয়েছে। যে অংশগুলো অনুপস্থিত ছিল তার মধ্যে ছিল অষ্টম অনুচ্ছেদের কিছু অংশ এবং পুরো নবম ও দশম অনুচ্ছেদ। নবম অনুচ্ছেদে কংগ্রেসের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা যেমন হেবিয়াস করপাসের অধিকার বর্ণিত আছে। এতে বলা হয়েছে, বিদ্রোহ বা আক্রমণের সময় ছাড়া কংগ্রেস এই অধিকার স্থগিত করতে পারবে না। সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বিষয়টি আলোচনায় আসে। মে মাসে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার জানান, প্রশাসন হেবিয়াস করপাস স্থগিতের বিষয়টি বিবেচনা করছে। একই মাসে স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোম ভুলভাবে বলেন, এটি প্রেসিডেন্টের একক ক্ষমতা। দশম অনুচ্ছেদে অঙ্গরাজ্যের ওপর বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যেমন কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া শুল্ক আরোপ না করা।

শেষ পর্যন্ত, ওয়েবসাইটের এই পরিবর্তন আইনি কোনো প্রভাব ফেলে না। সংবিধান পরিবর্তনের একমাত্র পথ হলো কংগ্রেস থেকে শুরু হওয়া আনুষ্ঠানিক সংশোধনী প্রক্রিয়া।

* সামান্থা পাটারম্যান একজন মার্কিন সাংবাদিক ও ফ্যাক্ট-চেকার, যিনি PolitiFact–এ কাজের জন্য পরিচিত।


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন