Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

সাবেক রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের হুমকিমূলক টুইটের পর পরমাণু সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১২:২৫ পিএম

সাবেক রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের হুমকিমূলক টুইটের পর পরমাণু সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ট্রাম্প দিমিত্রি মেদভেদেভের টুইটকে ‘মূর্খতা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য’ বলে আখ্যা দেন। ছবি: স্পুটনিক/ইপিএ, জুমা/শাটারস্টক

ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের এক হুমকিসূচক পোস্টের পর পরমাণু সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উত্তেজনার মাঝে এই ঘটনাটি ঘটে। মেদভেদেভ ট্রাম্পের রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিকে ‘যুদ্ধের পথে এক ধাপ’ বলে উল্লেখ করেন। এরপর ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লেখেন, মেদভেদেভের কথাবার্তা ছিল অতিরঞ্জিত ও উস্কানিমূলক, তাই তিনি দুটি পরমাণু সক্ষম সাবমেরিন যথাযথ স্থানে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন—যদি ভবিষ্যতে এই বক্তব্যগুলো শুধু কথা না থেকে কার্যকর কোনো হুমকিতে রূপ নেয়। তিনি বলেন, “শব্দের গুরুত্ব অনেক। কখনও কখনও এগুলো অনিচ্ছাকৃত ফলাফল বয়ে আনে। আশা করি এবার তা হবে না।”

ট্রাম্প পরিষ্কার করেননি এটি পরমাণু-চালিত না পরমাণু-অস্ত্র-সহ সাবমেরিন। পরে সাংবাদিকেরা যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেন কেন তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন, ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়ার এক সাবেক প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছেন, আর আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করব।”

মেদভেদেভ, যিনি এখন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান, টুইটারে আগ্রাসী ও রহস্যজনক ভাষায় পশ্চিমা দেশ ও নেতাদের প্রতি আক্রমণ চালান প্রায়ই। এবার তিনি ট্রাম্পকে কটাক্ষ করেন, কারণ ট্রাম্প ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনার সময়সীমা ৫০ দিন থেকে ১০ দিনে নামিয়ে এনেছেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়া চুক্তি না মানলে তিনি নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক শাস্তি দেবেন। মেদভেদেভ লিখেছিলেন, “ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে চূড়ান্ত আল্টিমেটামের খেলায় নেমেছে: ৫০ দিন অথবা ১০ দিন। তাঁর মনে রাখা উচিত, রাশিয়া ইসরায়েল নয়, এমনকি ইরানও নয়। প্রতিটি নতুন আল্টিমেটাম একটা হুমকি ও যুদ্ধের পথে পদক্ষেপ—শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন নয়, বরং নিজের দেশের সঙ্গেও।” শেষে তিনি যোগ করেন, “ঘুমকাতুরে জোরাসানের (বাইডেনের) পথে হাঁটবেন না।”

কয়েকজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ট্রাম্পের সাবমেরিন মোতায়েনের ঘোষণা রাশিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ানোর কৌশল হতে পারে, তবে তা সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু সাবমেরিন আগে থেকেই মোতায়েন রয়েছে, যেগুলো রাশিয়ায় আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে।

ইতিমধ্যে ট্রাম্প প্রকাশ্যে পুতিনের ওপর হতাশা জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, পুতিন যুদ্ধবিরতির আলোচনা আটকে রাখছেন, যদিও ট্রাম্প দাবি করেন তিনি মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করাতে সক্ষম হবেন। গত মাসে হোয়াইট হাউসে তিনি বলেছিলেন, “আমি বাড়ি ফিরলাম, ফার্স্ট লেডিকে বললাম—আজ ভ্লাদিমিরের সঙ্গে দারুণ কথা হলো। তিনি বললেন—ও, তাই নাকি, এখনই একটা শহরে বোমা পড়েছে।”

পুতিন ট্রাম্পের আল্টিমেটামের কোনো জবাব দেননি। শুক্রবার তিনি শুধু বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে স্থায়ী ও স্থিতিশীল শান্তি চায়। তবে কী ধরনের ছাড় দিয়ে তা অর্জিত হতে পারে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি। এ সময়ও ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় প্রাণহানি আর ধ্বংস চলছিল।

পুতিন বলেন, “আমরা এমন এক শান্তি চাই যা দীর্ঘস্থায়ী, স্থিতিশীল, রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং উভয় পক্ষের প্রত্যাশা পূরণ করে।” তবে কিয়েভের কাছে রাশিয়ার প্রস্তাবগুলো সবসময়ই অসম্ভব ও অগ্রহণযোগ্য।

ইস্তানবুলে রাশিয়া-ইউক্রেন তৃতীয় দফার সরাসরি আলোচনাও এক ঘণ্টার কম সময়েই ভেঙে পড়ে। কোনো চুক্তি হয়নি, শুধু বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে কিছু অগ্রগতি হয়।

ট্রাম্পের মন্তব্যকে ইঙ্গিত করে পুতিন শুক্রবার বলেন, “কারও যদি কোনো বিষয়ে হতাশা থাকে, তার মূল কারণ অতিরিক্ত প্রত্যাশা। এটা এক সুপরিচিত সাধারণ নিয়ম।”

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন