যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে বাংলাদেশি অভিবাসীসহ চারজন নিহত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের একটি বাণিজ্যিক বহুতল ভবনে বন্দুকধারীর হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা। এ ঘটনায় মোট পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস। নিহতদের মধ্যে হামলাকারী নিজেও ছিল।
সোমবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে লেক্সিংটন অ্যাভিনিউ ও ৫১ নম্বর স্ট্রিটের সংযোগস্থলের একটি অফিস ভবনে এই হামলা হয়। নিউইয়র্ক পুলিশের তিনটি গাড়ি এবং দুটি অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর ট্রাক ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পুলিশের উপস্থিতিতে এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার সময় পাশে অবস্থান করছিলেন বিবিসির সংবাদদাতা ইন্দ্রানী বসু। তিনি বলেন, একজন আহত ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, যার বুকে ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। এক পথচারী তাকে বলেন, তিনি একাধিক গুলির শব্দ শুনেছেন।
পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীর গাড়ি থেকে একটি এম-ফোর রাইফেল ও একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে। তার কাছে নেভাদা রাজ্যের ড্রাইভিং লাইসেন্সও পাওয়া গেছে। ঘটনার পর সন্দেহভাজনকে নিষ্ক্রিয় করে এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। যদিও কীভাবে হামলাকারী মারা গেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়নি। সিবিএস নিউজ দাবি করেছে, সে আত্মঘাতী গুলিতে মারা গেছে।
এ ঘটনায় যে পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন তার নাম দিদারুল ইসলাম। নিউইয়র্ক পুলিশে তিনি তিন বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশি অভিবাসী ছিলেন। মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, তিনি নিজের দায়িত্ব পালনের সময় প্রাণ দিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার টিশ জানান, দিদারুল ইসলাম বিবাহিত ছিলেন এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী বর্তমানে তৃতীয় সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন।
সন্দেহভাজন হামলাকারীকে ঘটনাস্থলের নজরদারি ক্যামেরায় অস্ত্র হাতে দেখা গেছে। সে সানগ্লাস পরা অবস্থায় ভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে লাস ভেগাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্দেহভাজনের মানসিক সমস্যার পুরনো রেকর্ড রয়েছে।
ঘটনাটি যে ভবনে ঘটেছে সেটি একটি বাণিজ্যিক অফিস ভবন ছিল। সেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘পেইড ডিটেইল’ ইউনিটের পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল, যাদের একজন ছিলেন দিদারুল ইসলাম।
মেয়র অ্যাডামস বলেন, এই ভয়াবহ ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় বন্দুক পাওয়া কত সহজ এবং এটা কীভাবে নিরীহ মানুষদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে। তিনি বলেন, বন্দুক-সহিংসতা আমেরিকার বহু মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে এবং আমাদের এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, আজ রাতে আমরা আহতদের জন্য প্রার্থনা করছি এবং নিরীহ নিউইয়র্কবাসীদের রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যাব।