Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

টেক্সাসে প্রবল বন্যায় অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:২৫ এএম

টেক্সাসে প্রবল বন্যায় অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে হঠাৎ করে হওয়া প্রবল বন্যা এখনো থামেনি। এখন পর্যন্ত কের কাউন্টিতে অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শেরিফ ল্যারি লাইথা। তাঁর মতে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এর মধ্যে একটি মৃত্যু পাশের কেন্ডাল কাউন্টিতে হয়েছে, তবে তা বন্যার কারণে কি না তা নিশ্চিত নয়।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে “ভয়ংকর” বলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিউ জার্সির পথে এয়ার ফোর্স ওয়ানে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “এটা একেবারেই ভয়াবহ। কতজন মারা গেছেন, এখনও নিশ্চিত নয়, তবে মনে হচ্ছে কিছু তরুণ প্রাণ গেছে।” তিনি জানান, ফেডারেল সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। “হ্যাঁ, আমরা ওদের পাশে থাকবো। গভর্নরের সঙ্গে কাজ করছি। এটা একটা ভয়ানক ব্যাপার,” তিনি বলেন।

রাজ্যের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন, যে ১৩টি কাউন্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় সব ধরনের সহায়তা পৌঁছানো হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

কের কাউন্টির হান্ট এলাকায় গুডালুপ নদী মাত্র ৯০ মিনিটে ২০ ফুটের বেশি উপরে উঠে যায়। রাত ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে মাত্র ২ ঘণ্টায় নদীর পানির উচ্চতা ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। ১৯৮৭ সালের বন্যার পর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি।

বিশেষ করে ক্যাম্প মিস্টিক নামের একটি বেসরকারি গার্লস সামার ক্যাম্পে ২৩ থেকে ২৫ জন শিশু নিখোঁজ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই ক্যাম্পে মোট প্রায় ৭৫০ জন শিশু ছিল। হেলিকপ্টার, ড্রোন ও উদ্ধারকারী দল গাছের উপরে আটকে পড়া শিশুদের উদ্ধারে কাজ করছে। এখনও অবধি ২৩৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৬৭ জনকে হেলিকপ্টারে উদ্ধার করা হয়।

হাউস্টন, সান অ্যাঞ্জেলো সহ বিভিন্ন শহর থেকে উদ্ধারকারীরা ইতিমধ্যেই কের কাউন্টিতে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড, কোস্ট গার্ড এবং ফেডারেল এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (FEMA) সক্রিয়ভাবে উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে।

ইংরামের ইনগ্রাম এলিমেন্টারি স্কুলকে পুনর্মিলন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের জন্য অপেক্ষা করছে। কেউ কেউ জানিয়েছে, তারা ঘুমের মধ্যে জেগে উঠে দেখে তাদের ঘরে পানি ঢুকছে, মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে তারা পানি ডিঙিয়ে সাঁতার কেটে বাড়ি ছাড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পুলিশের লোকজন ভোর ৬টার সময় দরজায় কড়া নেড়ে বলেন, “নদীতে মানুষ চিৎকার করছে, এখনই সরে যেতে হবে।” কিছু বাসিন্দা শুধু গায়ে থাকা জামাকাপড় নিয়ে বেরিয়ে আসেন। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের মতে, শুক্রবারের সকাল পর্যন্ত ১০ ইঞ্চির বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে যা পুরো গ্রীষ্মের সমান। ভূমি শুকনো থাকায় পানি দ্রুত জমে গিয়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে।

এই প্রবল বর্ষণ এবং বন্যাকে “১-ইন-১০০-ইয়ার” ইভেন্ট বলা হচ্ছে, অর্থাৎ বছরে একবার ঘটার সম্ভাবনা মাত্র ১%।

শহরগুলোতে উদ্ধারকাজ চলছে দিনরাত। গভর্নর অ্যাবট জানান, “অন্ধকার নামলেও উদ্ধার চলবে, সকাল হোক বা রাত – আমরা কাজ বন্ধ করবো না।”

সূত্র: সিএনএন

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন