বালির কাছে ফেরি ডুবে: ৩০ জন নিখোঁজ, ৪ জনের মৃত্যু

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের কাছে একটি ফেরি ডুবে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার ত্রাণকর্মীরা নিখোঁজ ৩০ জনকে খুঁজে পেতে অভিযান চালাচ্ছেন বুধবার রাতে দুর্ঘটনায় চারজন মারা গেছেন
বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন ফেরিটির ৫৩ জন যাত্রী এবং ১২ জন কর্মীর মধ্যে ৩১ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে
কেএমপি তুনু প্রতমা জয়া নামের ফেরিটি বুধবার রাতের দিকে পূর্ব জাভার বাঞ্জুয়াংই শহরের কেতাপাং বন্দর থেকে বালির গিলিমানুক বন্দরের দিকে যাত্রা শুরু করে যাত্রা শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা পর এটি ডুবে যায় ফেরিটির দূরত্ব ছিল প্রায় ৫০ কিলোমিটার
উদ্ধার কাজে একটি হেলিকপ্টার ও নয়টি নৌকা ব্যবহার করা হয়েছে এর মধ্যে দুটি টাগবোট ও দুটি রাবারের নৌকাও ছিল তাছাড়া স্থানীয় জেলে এবং উপকূলে থাকা মানুষজনও উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা করেছেন
রাতে সমুদ্র ছিল উত্তাল ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল দুই মিটার অন্ধকার থাকার কারণে উদ্ধার কাজে বিঘ্ন ঘটে তবে বৃহস্পতিবার সকালে আবহাওয়া কিছুটা উন্নত হওয়ায় তল্লাশি কার্যক্রম দ্রুত গতিতে চালানো যায়
সুরাবায়া অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিভাগের প্রধান নানাং সিগিত জানিয়েছেন আজকের অভিযানে মূলত পানিতে নিখোঁজদের খোঁজা হচ্ছে কারণ প্রাথমিকভাবে যারা উদ্ধার হয়েছেন তারা দুর্ঘটনার স্থান ও গিলিমানুক বন্দরের মাঝখানের জলসীমায় পাওয়া গেছে
ঘটনাটি একজন বন্দরের কর্মচারী নিজ চোখে দেখেছেন তবে তখন পর্যন্ত উদ্ধারকারী দলকে জানানো সম্ভব হয়নি
সিগিত জানিয়েছেন ফেরিটির সাথে শুরু থেকেই রেডিও যোগাযোগ করা যায়নি পরে একই কোম্পানির অন্য একটি জাহাজের মাধ্যমে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছিল তখন জাহাজটি হেলে পড়া অবস্থায় ছিল
বাঞ্জুয়াংই জেলার পুলিশ প্রধান রামা সামতামা পুত্র বলেন অনেক যাত্রীকে উদ্ধার করার সময় অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে কারণ তারা উত্তাল সাগরে অনেক সময় ধরে ভেসে ছিলেন
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে কিছু যাত্রী জানিয়েছেন ফেরিটির ইঞ্জিন কক্ষ থেকে পানি ঢুকতে দেখা গেছে ফেরিটিতে ২২টি যানবাহন ছিল এর মধ্যে ১৪টি ছিল ট্রাক
অনেক যাত্রীদের আত্মীয়স্বজন বন্দরে ছুটে এসেছেন কেউ কেউ কাঁদছেন কেউ কেউ আতঙ্কিত হয়ে প্রিয়জনদের খবর জানার চেষ্টা করছেন
উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের চিকিৎসার জন্য কাছাকাছি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এর মধ্যে বালির জেমব্রানা আঞ্চলিক হাসপাতালও রয়েছে
একজন বেঁচে ফেরা যাত্রী সুপারদি যিনি ৬৪ বছর বয়সী তিনি জানিয়েছেন ফেরিটি হেলে পড়তে শুরু করলে তিনি প্রথমে লাফ দিয়ে সাগরে নামার কথা ভেবেছিলেন কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে পানি ঢুকে জাহাজটি ডুবে যায় ফলে তিনি আর লাফ দেননি বরং পানির সঙ্গে ডুবে গিয়ে প্রায় সাত মিটার গভীরে চলে যান পরে কোনোমতে উপরে উঠে আসেন
তিনি আরও বলেন তিনি ও আরও তিনজন যাত্রী একসাথে থেকে লাইফ জ্যাকেটের সাহায্যে ভেসে ছিলেন
ইন্দোনেশিয়াতে প্রায় ১৭ হাজার দ্বীপ রয়েছে এবং এখানকার মানুষজন যাতায়াতের জন্য প্রায়ই ফেরি ব্যবহার করেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে এমন দুর্ঘটনা সেখানে প্রায়ই ঘটে থাকে।