Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

লস অ্যাঞ্জেলসে আইস অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ব্যাপক গ্রেফতার, কারফিউ জারি

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০১:২৯ পিএম

লস অ্যাঞ্জেলসে আইস অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ব্যাপক গ্রেফতার, কারফিউ জারি

 লস অ্যাঞ্জেলস শহরের ডাউনটাউন এলাকায় টানা কয়েকদিন ধরে চলমান বিক্ষোভ ও সহিংসতার প্রেক্ষিতে নগর কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে। কারফিউয়ের আওতায় পড়েছে শহরের এক বর্গমাইল এলাকা। কারফিউ চলাকালীন সময় লস অ্যাঞ্জেলস পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এলএপিডি) বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে বলে জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা মার্কিন অভিবাসন সংস্থা আইস (Immigration and Customs Enforcement) কর্তৃক অনথিভুক্ত অভিবাসীদের ওপর চালানো অভিযান ও নির্বিচার গ্রেফতারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দ্রুতই সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও কিছু লুটপাটের ঘটনায় পরিণত হয়।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম মঙ্গলবার রাতে এক জোরালো প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের নিন্দা করে বলেন, “লস অ্যাঞ্জেলস জুড়ে সেনা মোতায়েন করে গণতন্ত্রকে চোখের সামনে আক্রমণ করা হচ্ছে।” তিনি বলেন, ট্রাম্প সরকার "একটি সামরিক জাল" বিছিয়ে দিচ্ছে, যা একপ্রকার নাগরিক স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রায় ৫,০০০ সৈন্য – যার মধ্যে ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনাও রয়েছে – লস অ্যাঞ্জেলসে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।

লস অ্যাঞ্জেলস থেকে ছড়িয়ে পড়া এই আন্দোলন মঙ্গলবার নিউইয়র্ক, শিকাগো, আটলান্টা, ওমাহা এবং সিয়াটেলসহ অন্যান্য শহরেও গড়ায়। নিউইয়র্ক সিটির ফোলি স্কয়ারে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়, যেখানে ফেডারেল সরকারের অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করা হয়।

অন্যদিকে, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত Marines ও National Guard সদস্যদের শুধু ফেডারেল ভবন পাহারার বাইরে অন্য কোনো কার্যকলাপে নিষেধাজ্ঞার আবেদন আপাতত নাকচ করেছে এবং বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছে।

ফোর্ট ব্র্যাগ সামরিক ঘাঁটিতে দেওয়া এক বিতর্কিত ভাষণে ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলসকে “আবর্জনার স্তুপ” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, তিনি শহরটিকে "মুক্ত, পরিষ্কার এবং নিরাপদ" করে তুলবেন। এ সময় তিনি বেশ কিছু ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দেন এবং কনফেডারেট নেতাদের নামে সেনাঘাঁটির নাম পুনর্বহালের প্রতিশ্রুতিও পুনরায় ব্যক্ত করেন।

যদিও পরে ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম এবং এলএ মেয়র ক্যারেন ব্যাসের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে ‘উস্কানিদাতা নিয়োগ’-এর অভিযোগ অস্বীকার করেন, তবু ফোর্ট ব্র্যাগে তাঁর দেওয়া ভাষণের ভিডিও ফুটেজে তাকে এ অভিযোগ করতে দেখা গেছে।

‘বিদেশি পতাকা’ তত্ত্ব এবং বিভ্রান্তি:

গার্ডিয়ান-এর সাংবাদিক রবার্ট ম্যাকির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ট্রাম্পের ভাষণে করা কিছু অসত্য ও বিভ্রান্তিকর দাবিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, “বিদেশি পতাকা বহনকারী বেতনভুক্ত দাঙ্গাবাজরা” এই আন্দোলন পরিচালনা করছে এবং এটি একটি ‘বিদেশি আগ্রাসন’-এর অংশ।

এই বক্তব্যের সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার সামাজিক মাধ্যমে বলেন, “বিদেশি নাগরিকেরা বিদেশি পতাকা হাতে দাঙ্গা করছে।” ট্রাম্পের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েমও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাউমের বিরুদ্ধে “সহিংস আন্দোলনে উস্কানি দেওয়ার” অভিযোগ তোলেন, যা শেইনবাউম সাফ মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেন।

প্রসঙ্গত, বিক্ষোভের সময় কিছু মানুষ মেক্সিকো, গুয়েতেমালা এবং এল সালভাদরের পতাকা, কিংবা এসব দেশের পতাকা ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা একত্রে জুড়ে তৈরি পতাকা বহন করে। এটি তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় ও অভিবাসীদের প্রতি সংহতির বহিঃপ্রকাশ বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন