Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

চিকিৎসক জীবন বাঁচাতে গেছেন, কিছুক্ষণ পর তারই ৭ সন্তান পুড়ে অঙ্গার হয়ে এলো হাসপাতালে

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১০:১৪ এএম

চিকিৎসক জীবন বাঁচাতে গেছেন, কিছুক্ষণ পর তারই ৭ সন্তান পুড়ে অঙ্গার হয়ে এলো হাসপাতালে

ডা. আলা আন-নাজ্জার গাজার দক্ষিণে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে কাজ করেন। গত শুক্রবার সকালে তিনি যখন তাঁর জরুরি বিভাগের ডিউটিতে যান, তখন তাঁর ১০ জন সন্তান বাড়িতে ছিল।

কয়েক ঘণ্টা পর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় সাতটি শিশুর মরদেহ—তারা ছিল তাঁরই সন্তান। অধিকাংশ দেহ পুড়ে অচেনা হয়ে গিয়েছিল। বয়স ছিল ৩ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। আরও দুটি শিশু—৭ মাস বয়সী এবং ২ বছর বয়সী—ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিল পরদিন সকালেও।

একমাত্র একটি সন্তান বেঁচে আছে—গুরুতর আহত অবস্থায়। তাঁর স্বামীও একজন চিকিৎসক, তিনিও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

গাজার সিভিল ডিফেন্স এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় খান ইউনিস শহরের একটি আবাসিক এলাকায় তাঁদের বাড়ি টার্গেট করা হয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা হামলা চালিয়েছে "একটি কাঠামোতে অবস্থানরত সন্দেহভাজনদের ওপর", যেটি আইডিএফ বাহিনীর খুব কাছেই ছিল। তারা এই ঘটনায় বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার দাবিটি খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে।

 গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বার্শ জানান, ডা. নাজ্জারের স্বামী সদ্য বাড়ি ফিরেছিলেন, তখনই বিমান হামলা হয়। নিহত সন্তানদের নাম: ইয়াহিয়া, রাকান, রাসলান, জিবরান, ঈভ, রিভাল, সাইদিন, লুকমান, ও সিদরা। স্বামী ইনটেনসিভ কেয়ারে ভর্তি আছেন।

তিনি বলেন, “এটাই আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের বাস্তবতা। শুধু চিকিৎসকরা নয়, পুরো পরিবারও নিশানা হচ্ছে।”

একজন স্থানীয় সাংবাদিক তারেক আল হিলু একটি শিশু মেয়ের জীবনচিত্র তুলে ধরেন, যে পানির জন্য ভারী বালতি টেনে নিচ্ছে ধ্বংসপ্রাপ্ত ঘরের ভিতরে। কয়েকদিন পরে ফিরে এসে জানতে পারেন, তার ছোট বোনটি অপুষ্টিতে মারা গেছে।

 নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের আরেকজন চিকিৎসক আহমাদ আল-ফাররা বলেন, তাঁর সন্তানদের মৃত্যুর মধ্যেও ডা. নাজ্জার হাসপাতালের কাজে অবিচল ছিলেন। মাঝে মাঝে গিয়ে স্বামী ও ১১ বছর বয়সী একমাত্র বেঁচে থাকা সন্তান আদামের খবর নিচ্ছিলেন। তাঁদের দুজনেরই অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউসুফ আবু আল-রিশ বলেন, “তিনি নিজের সন্তানদের ফেলে এসেছেন, কারণ অসুস্থ শিশুদের পাশে দাঁড়ানো ছিল তাঁর পবিত্র দায়িত্ব।”

তিনি বলেন, “আমি হাসপাতালে এসে দেখি, তিনি নীরবে দাঁড়িয়ে আছেন—সাহসী, শান্ত, ধৈর্যশীল। মুখে শুধু সৃষ্টিকর্তার স্মরণ আর ক্ষমা চাওয়ার বাক্য।”

ডা. নাজ্জার, ৩৮ বছর বয়সী একজন শিশু চিকিৎসক, কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সূত্র: সিএনএন

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন