Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়েছে, হাড়ে ছড়িয়ে গেছে: চিকিৎসার বিকল্প খুঁজছে পরিবার

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১২:১৯ পিএম

জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়েছে, হাড়ে ছড়িয়ে গেছে: চিকিৎসার বিকল্প খুঁজছে পরিবার

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শরীরে আক্রমণাত্মক ধরণের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়েছে, যা হাড়ে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে—রবিবার (১৮ মে) তার ব্যক্তিগত দপ্তর এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

৮২ বছর বয়সী বাইডেন সম্প্রতি প্রস্রাবে সমস্যা এবং প্রোস্টেটে গাঁট দেখা দেওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। এরপরই ক্যান্সার শনাক্ত হয়। এখন তিনি ও তার পরিবার চিকিৎসার উপায় খুঁজছেন।

বাইডেনের দপ্তর থেকে বলা হয়, “যদিও এটি রোগের একটি জটিল ও আগ্রাসী ধরন, তবু এটি হরমোন-নির্ভর হওয়ায় চিকিৎসায় প্রতিক্রিয়া ভালো আসার সুযোগ রয়েছে।”

প্রোস্টেট ক্যান্সারের গম্ভীরতা মাপতে এক ধরণের ‘গ্লিসন স্কোর’ ব্যবহার করা হয়। ১ থেকে ১০ স্কোরের মধ্যে বাইডেনের স্কোর ৯, যা এটিকে খুবই আক্রমণাত্মক হিসেবে চিহ্নিত করে।

এ ধরণের ক্যান্সার যখন শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে হাড়ে, তখন তা চিকিৎসার ক্ষেত্রে আরও চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। কারণ, সব টিউমারে ওষুধ পৌঁছানো কঠিন হয়ে যায়।

সাবেক ও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়া বাইডেনের এই খবর শুনে প্রকাশ্যে উদ্বেগ জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, “আমরা এই খবর শুনে দুঃখিত। জো এবং তার পরিবারের জন্য আমাদের শুভকামনা রইল।”

কমলা হ্যারিস, যিনি বাইডেনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলেন, এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, “জো একজন লড়াকু মানুষ। আমি জানি, তিনি এই সংকটও সাহস, দৃঢ়তা ও আশাবাদ দিয়ে মোকাবিলা করবেন।”

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা-সহ অনেক নেতাই বাইডেনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়সী প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার বয়স ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে বহুদিন ধরেই ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল।

২০২০ সালে তিনি ট্রাম্পকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, এবং পরে পুনরায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে বয়স নিয়ে বিতর্কের মধ্যে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেন।

২০২৪ সালের নির্বাচনে হ্যারিসকে হারিয়ে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে ফেরেন।

বাইডেনের জীবনে ব্যক্তিগত দুর্যোগের ছাপও গভীর। ১৯৭২ সালে সেনেট সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরপরই এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও শিশু কন্যা মারা যান।

পরে তার বড় ছেলে বো বাইডেন ক্যান্সারে মারা যান। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেও বাইডেন চর্মক্যান্সার (নন-মেলানোমা) অপসারণের চিকিৎসা নিয়েছিলেন এবং ২০২৩ সালে তার বুকে একটি ক্যান্সারসদৃশ দাগ অপসারণ করা হয়।

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই বাইডেনের এক বড় অঙ্গীকার। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে “ক্যান্সার মুনশট” নামে একটি উদ্যোগ নেন, যার লক্ষ্য—পরবর্তী ২৫ বছরে ক্যান্সারে মৃত্যুহার অর্ধেক কমিয়ে আনা।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল, রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ বাইডেনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম বলেন, “একজন মর্যাদাপূর্ণ, সহানুভূতিশীল মানুষ হিসেবে বাইডেনের দীর্ঘ ও সুন্দর জীবন পাওয়ার প্রাপ্যতা আছে।”

পিট বুটিজেজ, বাইডেন প্রশাসনের সাবেক পরিবহন সচিব, বলেন, “তিনি দৃঢ় মানসিকতা ও গভীর বিশ্বাসের মানুষ। আমরা তার জন্য প্রার্থনা করছি।”

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন