Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

দিল্লি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ৪০ রোহিঙ্গাকে সাগরে ফেলে দিয়েছে ভারত

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১১:০৮ পিএম

দিল্লি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ৪০ রোহিঙ্গাকে সাগরে ফেলে দিয়েছে ভারত

৪০ জন রোহিঙ্গাকে রাজধানী দিল্লি থেকে ধরে আন্দামান সাগরে নিয়ে ফেলে দিয়েছে ভারত। এমন ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস।

জাতিসংঘের বলেছে, ভারত সরকার সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া জোরদার করেছে। এর অংশ হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনী ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সাগরে ফেলে দিয়েছে।

মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ বলেছেন, জাহাজ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাগরে ফেলে দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত ভয়ানক। আমি এই ঘটনার বিষয়ে আরও তথ্য ও সাক্ষ্য সংগ্রহ করছি। ভারত সরকারকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের বৈশ্বিক মুখপাত্র বাবর বালুচ বলেন, তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। ভারত আশ্বাস দিয়েছে যে, শরণার্থীদের জীবন বা স্বাধীনতার ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ফেরত পাঠানো হবে না।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে নিষ্ঠুরতা অবলম্বন করেছে।

ভারতের স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গত ৬ মে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে পুলিশ বেশ কিছু রোহিঙ্গাকে আটক করে। এর মধ্যে ৪০ জনকে চোখ বেঁধে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মাইল দূরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজে তোলা হয়। জাহাজটি আন্দামান সাগরের কাছে মিয়ানমারের তানিনথারি অঞ্চলের দিকে যাত্রা করে।

ওই জাহাজে থাকা রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, তানিনথারির কাছে পৌঁছানোর পর তাদের লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয় এবং সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয়। ওই সময় তাদের মিয়ানমারের একটি দ্বীপে সাঁতরে চলে যেতে নির্দেশ দেয় ভারতীয় সেনারা।

ভারতের মানবাধিকার সংগঠন পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ (পিইউসিএল) জানিয়েছে, যাদের পানিতে ফেলা হয়েছিল তাদের মধ্যে কিশোর, বয়স্ক এবং ক্যানসার রোগীও ছিল। ওই ৪০ রোহিঙ্গার তবে ভাগ্য ভালো থাকায় সবাই জীবিত অবস্থায় তীরে পৌঁছাতে পেরেছ। 

ওই ৪০ জন রোহিঙ্গার মধ্যে কয়েকজন জানিয়েছেন, ভারতীয় নৌ সেনারা তাদের মারধর ও অন্যান্য নির্যাতন করেছে।

ভারত গত সপ্তাহে বাংলাদেশেও ৭৮ জনকে পুশ ইন করে। যাদের গুজরাট থেকে ধরে এনে সুন্দরবনে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে গিয়েছিল। বাংলাদেশ ১০ মে এসব মানুষকে উদ্ধার করে। তাদের ওপরও নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এমনকি তাদের না খাইয়ে রাখা হয়েছিল।

যদিও ভারত ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনের পক্ষ নয়, তবুও প্রত্যাবাসন না করাকে ব্যাপকভাবে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা সকল রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক। 

তবে ভারত নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনেরও স্বাক্ষরকারী দেশ, যা কোনো ব্যক্তিকে এমন কোনো রাজ্যে বহিষ্কার, ফেরত পাঠানো বা প্রত্যর্পণ নিষিদ্ধ করে যেখানে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে তারা নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মুখোমুখি হওয়া পরিস্থিতি প্রত্যাবর্তনের সময় নির্যাতন বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য উদ্বেগ প্রকাশ করে, যা ভারতের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করে।

বিশ্বের অন্যতম নিপীড়িত জনগোষ্ঠী হলো রোহিঙ্গারা। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে দশ লাখেরও বেশি মানুষ পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আর ২২ হাজারের বেশি মানুষ ভারতে জাতিসংঘের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় পান।

তবে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি ভারত সরকার। দেশটির সরকার দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখে আসছে। তারা তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনেছে। 

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন