
যদি আপনি এখনই ঘটনাটির সাথে যুক্ত হচ্ছেন, তাহলে চলুন দেখে নিই—ভারত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক উত্তেজনার মধ্যে কী ঘটেছে এখন পর্যন্ত।
শনিবার ভোরে পাকিস্তান জানায়, ভারতের ছোড়া ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সামরিক ঘাঁটি—নূর খান, মুরিদ ও শোরকোট—লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, এর বেশিরভাগই তারা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।
এর জবাবে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসূস’ নামে এক সামরিক পাল্টা হামলা চালায়। এই নামের অর্থ ‘সিসা ঢালা দেয়াল’। পাকিস্তান জানায়, তারা ভারতের একাধিক সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা করেছে, যার মধ্যে একটি ছিল একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুদাম।
পাকিস্তানের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের পাঠানকোট বিমানঘাঁটি এবং কাশ্মীরের উধমপুর বিমানঘাঁটি ছিল এই হামলার মূল লক্ষ্য। দুই ঘাঁটি থেকেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ভারতের যেসব জায়গায় হামলার চেষ্টা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি। এই ঘাঁটিটি ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের খুব কাছে। বিস্ফোরণের পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ঘটনার পর পাকিস্তান তার আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।
এই হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় দুই দেশের সংঘাত এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত কয়েক দশকে এমন উত্তেজনা আর দেখা যায়নি। তবে শনিবার উভয় দেশই জানিয়েছে, তারা সংঘর্ষ আরও বাড়াতে চায় না—যদি প্রতিপক্ষও একই আচরণ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—একসাথে বসে কথা বলার এবং উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজে বের করতে। জি-৭ দেশগুলোও ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে, এবং বলেছে—আরও সামরিক সংঘর্ষ হলে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে।
বুধবার থেকে ভারত ও পাকিস্তান প্রতিদিন সীমান্তে গোলাগুলিতে লিপ্ত হয়েছে। ভারতের দাবি, তারা পাকিস্তানের ভেতরে ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুই পক্ষ মিলিয়ে অন্তত ৪৮ জন নিহত হয়েছেন—যদিও এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এই সাম্প্রতিক উত্তেজনার শুরু হয় গত মাসে কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর এক হামলায়, যাতে ২৬ জন বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারান। ভারত দাবি করেছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিদের হাত রয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এই ঘটনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সম্ভাব্য বড় সংঘর্ষের আশঙ্কায় তারা সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন এবং রিজার্ভ বাহিনী সক্রিয় করার মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে।