যুদ্ধের মধ্যে আইএমএফ থেকে পাকিস্তান পেল ১০০ কোটি ডলার, ভারতের অভিযোগ "সন্ত্রাসে ব্যবহারের শঙ্কা"

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলমান ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পাকিস্তানের জন্য ১০০ কোটি ডলার নগদ ঋণ ছাড় করেছে। এ ছাড় দেওয়া হয় শুক্রবার, কর্মসূচির প্রথম ধাপের মূল্যায়ন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর। অর্থ ছাড়ের পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য নতুন করে আরও ১৪০ কোটি ডলারের একটি ঋণপ্যাকেজও অনুমোদন করেছে সংস্থাটি, যদিও সেটি এখনো কার্যকর হয়নি।
আইএমএফের ভাষ্যমতে, বৈশ্বিক আর্থিক চাপ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও পাকিস্তান অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে নীতিগত সিদ্ধান্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান কর্মসূচির আওতায় গৃহীত সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলো আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।
গত বছরের মাঝামাঝি শুরু হওয়া এই ঋণ কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের অর্থনীতিকে চাঙা করা ও চলতি হিসাব ঘাটতি সামাল দেওয়া। এখন পর্যন্ত কর্মসূচির আওতায় আইএমএফ থেকে মোট ২০০ কোটি ডলার ঋণ ছাড় হয়েছে। তবে জলবায়ু সহনশীলতা তহবিলের আওতায় ঘোষিত অতিরিক্ত অর্থ থেকে এখনো কোনো পরিমাণ অর্থ পাকিস্তান পায়নি।
তবে পাকিস্তানকে অর্থায়ন দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে প্রতিবেশী ভারত। শুক্রবার আইএমএফ বোর্ডের বৈঠকে ভারত দাবি করে, পাকিস্তান প্রাপ্ত এই অর্থ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ‘রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ ব্যবহৃত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তারা আইএমএফকে অনুরোধ জানায়, পাকিস্তানের ঋণ কার্যক্রম নিয়ে আরও গভীর ও স্বচ্ছ মূল্যায়ন করুক সংস্থাটি।
ভারতের এ অভিযোগের জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “ভারত আইএমএফের সহায়তা থামিয়ে দিতে যে অপচেষ্টা করেছে, তা ব্যর্থ হয়েছে।”
উল্লেখ্য, পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে চরম উত্তপ্ত। সম্প্রতি ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে ভারত। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা প্রবল আকার নিয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলার অংশ হিসেবে ভারত পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অঞ্চলে বিমান ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওই অঞ্চলে ভারতীয় বাহিনীর হামলার পর থেকে দুদেশের মধ্যে একাধিক সীমান্ত লড়াই, ড্রোন হামলা ও পাল্টা অভিযানের খবর পাওয়া গেছে। এমন সংকটপূর্ণ সময়েই আইএমএফের এই অর্থ ছাড় নতুন করে আন্তর্জাতিক পরিসরে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।