Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন খনিজ চুক্তি: ভবিষ্যতের সম্পদ ভাগাভাগিতে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১১:১৬ এএম

যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন খনিজ চুক্তি: ভবিষ্যতের সম্পদ ভাগাভাগিতে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত

ইউক্রেনের খনিজ ও রেয়ার আর্থ উপাদান (rare earth elements) থেকে ভবিষ্যতে অর্জিত লাভ ও রয়্যালটি ভাগাভাগি করতে একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন। এই চুক্তি একদিকে যেমন ইউক্রেনের যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠনে সহায়তা করবে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনার ক্ষেত্রও তৈরি করবে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

চুক্তির আওতায় গঠিত হতে যাচ্ছে একটি US-Ukraine Reconstruction Investment Fund, যার মাধ্যমে ইউক্রেনকে দেওয়া আনুমানিক ১৭৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তার একাংশ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

চুক্তি সইয়ের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, “এই চুক্তি রাশিয়াকে স্পষ্ট বার্তা দেয় যে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং সমৃদ্ধির জন্য দীর্ঘমেয়াদি শান্তিপ্রক্রিয়ায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

ইউক্রেনের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিডেনকো এক ফেসবুক পোস্টে জানান, “এই তহবিলের মাধ্যমে আমরা বৈশ্বিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করবো, এবং ইউক্রেন তার ভূখণ্ড ও জলসীমায় থাকা প্রাকৃতিক সম্পদের মালিকানা সম্পূর্ণভাবে বজায় রাখবে।”

চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:

ফান্ডে অংশীদারিত্ব: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন সমানভাবে ফান্ডটি পরিচালনা করবে; উভয়ের থাকবে সমান ভোটাধিকার।

সম্পদের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ: খনিজ সম্পদের মালিক থাকবে ইউক্রেন সরকারের হাতে; বিদ্যমান প্রকল্পের উপর কোন ঋণ চাপবে না।

লাভের উৎস: আয় হবে নতুন প্রকল্প থেকে দেওয়া লাইসেন্স, তেল ও গ্যাস খাতে বিনিয়োগ থেকে।

কর নীতি: যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনে এই আয় করমুক্ত থাকবে, যাতে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ রিটার্ন নিশ্চিত হয়।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শমিহাল বলেন, “এই চুক্তি সত্যিকারের একটি সমতা ও পারস্পরিক মুনাফার ভিত্তিতে গঠিত আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব।”

তবে চুক্তিকে ঘিরে কিছু বিতর্কও তৈরি হয়েছে। সমালোচকরা অভিযোগ করছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের দুর্বল অবস্থার সুযোগ নিচ্ছে। চুক্তির প্রাথমিক খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্র ফান্ডের ১০০% আয়ের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছিল। কিন্তু ইউক্রেনের আপত্তিতে তা পরিবর্তন করে এখন সমান ভাগে রূপান্তর করা হয়েছে।

বলা হচ্ছে, শুরুতে চুক্তির ধারনা ইউক্রেন থেকেই এসেছিল ট্রাম্প প্রশাসনকে পাশে পেতে। তবে জানুয়ারিতে ট্রাম্পপন্থী একটি দল এক খসড়া পাঠায় যাতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ প্রায় বিনা প্রতিদানে হস্তান্তরের কথা ছিল।

শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আলোচনার টানাপোড়েন চললেও, অবশেষে চুক্তিতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ। চুক্তিটি এখন ইউক্রেনের সংসদের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এনজিও Razom for Ukraine, যারা মনে করছে এটি ইউক্রেনের আত্মরক্ষা এবং ভবিষ্যৎ গঠন উভয়ের জন্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ।


Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: banglaoutlook@gmail.com

অনুসরণ করুন