আমরা আমেরিকার গুরুত্ব বুঝি, আমরা কৃতজ্ঞ: জেলেনস্কির ভিডিও বার্তা

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কয়েক দিন পরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞ। সোমবার (৪ মার্চ) এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, "আমরা আমেরিকার গুরুত্ব বুঝি এবং তাদের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।"
এই বার্তাটি আসে দুই দিন পর, যখন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নয় এবং তারা যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তি গ্রহণ করেনি।
জেলেনস্কি বলেন, "আমরা প্রতিদিনই আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আমেরিকার সহায়তার গুরুত্ব অনুভব করি। ইউক্রেনের প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের অংশীদারদের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল, যা শুধু আমাদের জন্য নয়, তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।"
নিরাপত্তা সম্মেলন ও শান্তির প্রত্যাশা
লন্ডনে অনুষ্ঠিত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে অংশ নিয়ে জেলেনস্কি বলেন, "যুদ্ধ শেষ করতে বাস্তব নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রয়োজন।" এই সম্মেলনের আয়োজন করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মার। এতে ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, কানাডার জাস্টিন ট্রুডো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিসহ ১৮ জন বিশ্বনেতা উপস্থিত ছিলেন।
জেলেনস্কি আরও বলেন, "আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আর শান্তি আনতে হলে নিরাপত্তা গ্যারান্টিই একমাত্র সমাধান।"
ট্রাম্প-জেলেনস্কির উত্তপ্ত বিতর্ক
শুক্রবার ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জেলেনস্কির প্রথম বৈঠক শুরু হয় সৌজন্যমূলক বিনিময়ের মাধ্যমে, কিন্তু দ্রুতই তা উত্তপ্ত বিতর্কে রূপ নেয়।
ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে "যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞ না থাকার" অভিযোগ করেন। ট্রাম্পও জেলেনস্কিকে সতর্ক করে বলেন, "আমেরিকার সহায়তা ছাড়া ইউক্রেন রাশিয়ার হাতে চলে যেত।"
বিতর্কের একপর্যায়ে জেলেনস্কিকে বৈঠক ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়, এবং তিনি নির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন না করেই হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন।
এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে নির্ধারিত খনিজ সম্পদ বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরও স্থগিত হয়ে যায়, যা যুদ্ধ শেষ করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারত।
এই উত্তপ্ত বিতর্ক বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।