Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

৯০ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২০ পিএম

৯০ ফিলিস্তিনির বিনিময়ে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি

মুক্তিপ্রাপ্তদের ঘিরে আনন্দ ও কান্না

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরই শুরু হয়েছে বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া। প্রথম ধাপে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল তার কারাগার থেকে ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে।

মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলিরা গাজা থেকে রেড ক্রসের হাতে হস্তান্তরের পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তেলআবিবের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। তারা মূলত তিনজন—৩১ বছর বয়সী ডরন স্টেইনব্রেচার, ২৮ বছর বয়সী ব্রিটিশ-ইসরায়েলি দ্বৈত নাগরিক এমিলি ডামারি এবং ২৪ বছর বয়সী রমি গোনেন। হাসপাতাল

সূত্র জানিয়েছে, তাদের অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও এমিলির হাতে ব্যান্ডেজ দেখা গেছে।

ইসরায়েলের কারাগার থেকে যে ৯০ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ৬৯ জন নারী ও ২১ জন কিশোর। হামাস বলেছে, এরা পশ্চিম তীর ও জেরুসালেমের বাসিন্দা, এবং ইসরায়েলি প্রিজন সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের পশ্চিম তীরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স উল্লেখ করেছে, যারা মুক্তি পেয়েছে তাদের সবাইকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো বিচার বা শাস্তির রায় হয়নি।

এদিকে ফিলিস্তিনের সুপরিচিত রাজনৈতিক নেতা খালিদা জাররার মুক্তি পেয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে। তিনি পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্যা লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং গত দশকের বেশিরভাগ সময়ই তাকে বারবার গ্রেপ্তার ও কারাগারে থাকতে হয়েছে।

এর আগে তাকে “উসকানি” দেওয়ার অভিযোগে দণ্ড দিয়েছিল ইসরায়েল, যে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মিলে পিএফএলপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।

কয়েক দফা বিলম্বের পর অবশেষে শুরু হওয়া এই যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের খবরে পশ্চিম তীরজুড়ে ফিলিস্তিনিরা আনন্দ-উদ্‌যাপন করে। রবিবার সারাদিনই মানুষ মুক্তিপ্রাপ্তদের স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করছিল। বৈতুনিয়া শহর অতিক্রম করার সময় বন্দিদের বহনকারী বাস দেখতে পেয়ে অনেকেই গাড়ির হর্ন বাজিয়ে ও স্লোগান দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে বাসের ভেতর থেকে বন্দিরা হাসিমুখে ভি-চিহ্ন দেখান। তাদের সঙ্গে রেড ক্রসের কর্মকর্তাদেরও দেখা গেছে।

যুদ্ধবিরতির ফলে এখন প্রতিদিনই গাজায় ত্রাণ প্রবেশের গতি বাড়ার কথা। জাতিসংঘ জানিয়েছে, রবিবার ৬৩০টির বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকেছে, যার মধ্যে ৩০০টিরও বেশি ট্রাক উত্তরাঞ্চলের দিকে গেছে।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার বলেছেন, “নষ্ট করার মতো কোনো সময় আমাদের হাতে নেই।” সংঘাতের আগে গড়ে প্রতিদিন ৫০০টির মতো ট্রাক গাজায় যেত, কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সে সংখ্যা নেমে এসেছিল গড়ে ৪০টিতে।

নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৬০০টির মতো ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করার কথা থাকলেও বাস্তবে পরিস্থিতি কতটুকু স্থিতিশীল হবে, তা নিয়ে এখনো সংশয় কাটেনি।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আডানোম গেব্রিয়াসুস গাজার ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সেখানে ভ্রমণ করা হবে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।

তিনি মনে করেন, গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে বিশাল পরিমাণ আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। তবে এই অস্থায়ী শান্তি ও বন্দি বিনিময়ে ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অন্যদিকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের অনেকের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তাদের আনন্দ আংশিক ম্লান হয়েছে। তবুও ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এই বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতি সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে আশা করছেন পর্যবেক্ষকরা।

গত কয়েক সপ্তাহের সংঘাতে সৃষ্ট মানবিক সংকট কমানোর উদ্দেশ্যে বাড়তি ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ এবং বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার পথে এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন