সাইফ আলী খানকে ছুরিকাঘাত
গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে বাংলাদেশি উল্লেখ করে সাধারণ ঘটনায় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র খুঁজছে ভারত?

ছবি: সংগৃহীত
বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে ভারতের মুম্বাইয়ের একটি আদালত। গত ১৬ জানুয়ারি মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাসায় ছুরিকাঘাতের শিকার হন। এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে শরিফুলকে আটক করা হয়।
এদিকে, মুম্বাইয়ের ওই আদালত উল্লেখ করেছে সাইফকে আক্রমণকারী বাংলাদেশ থেকে আগত। তাই ঘটনাটি সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র কিনা সেই ব্যাপারে সন্দেহ তৈরি করেছে। তবে অন্য কারণও থাকতে পারে।
আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) আউটলুক ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, আদালত তার আদেশে বলেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক। তাই এতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের সন্দেহ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সুতরাং, তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া উচিত।
এর আগে আজ সকালে গ্রেপ্তার শরিফুলকে বান্দ্রার আদালতে হাজির করে ১৪ দিনের পুলিশ ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
শুনানিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা যুক্তি তুলে ধরে বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি সাইফ আলী খানের বাড়িতে অনুপ্রবেশ করে এবং অভিনেতাকে ও অন্য দুইজনকে আক্রমণ করে আহত করে।
তিনি বলেন, সাইফ আলি খান ছুরির আঘাতসহ গুরুতর আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি কীভাবে অভিনেতার বাড়িতে প্রবেশ করেছিল এবং আক্রমণের পেছনের উদ্দেশ্য কী ছিল তা আমাদের তদন্ত করা দরকার। যেহেতু তিনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক, তাই কীভাবে তিনি ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তা খতিয়ে দেখা ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করছি।
অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী দীর্ঘ সময়ের এই রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করেন। শুধু তাই নয়, তিনি দাবি করেন, শরিফুল বাংলাদেশি নন। বরং তিনি মুম্বাইয়ে বসবাস করা একজন ভারতীয় নাগরিক।
শুনানিতে শরিফুলের আইনজীবী বলেন, কেবল সাইফ আলী খান সংশ্লিষ্ট হওয়ায় মামলাটি অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। অন্যথায় এটি একটি নিয়মিত মামলা হিসেবে বিবেচিত হতো। রিমান্ড আবেদনে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার কারণ পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। অভিযুক্ত যুবকের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কোনো অতীত ইতিহাস নেই। তাকে বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে।
এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তি মামলার বিস্তারিত তথ্য জানেন না বলেও আদালতে উল্লেখ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বলে, মামলা তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আজই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুতরাং, বাড়তি তদন্তের জন্য রিমান্ড চাওয়ার কারণগুলি ন্যায্য। তাকে (শরিফুলকে) গ্রেপ্তারে অবৈধতার বিষয়ে আসামিপক্ষের দাবি ভিত্তিহীন বলে মনে হচ্ছে।
শুনানি শেষে সংবাদমাধ্যমকে শরিফুলের আইনজীবী সন্দীপ শেখানে জাতীয়তার কারণে মামলার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের সমালোচনা করেন। সন্দীপ শেখানে বলেন, কেবল তিনি বাংলাদেশি বলে মামলার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। সাইফ আলি খান কখনো এমন কোনো বক্তব্য দেননি বা কারও কাছে কোনো অভিযোগ করেননি যার ফলে বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশ থেকে তার বিরুদ্ধে হুমকি আসতে পারে। জাতীয়তার বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ার আগ পর্যন্ত মামলাটি স্বাভাবিক হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছিল। পুলিশের দাবি অনুযায়ী ছয় মাস নয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি বহু বছর ধরে মুম্বাইতে বসবাস করছেন। তার পরিবার এখানেই আছে।