রাতারাতি বৈষম্যের অবসান হবে না: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম

বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠোমোতে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য চলে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সেখানে রাতারাতি এগুলোর সমাধান সম্ভব হবে না। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এই রাষ্ট্রকাঠামো বদলাতে হবে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর প্রেসক্লাবে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটুকু সু-রক্ষিত’ শিরোনামের এই সেমিনারের আয়োজন করে অর্পণ আলোক সংঘ নামের একটি সংগঠন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারর চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা এখনো আসতে পরিনি। এমনকি নির্বাচন নিয়েও একই বিষয় আছে, যদিও জাতি এখন সেই দিকেই মনোনিবেশ করেছে। যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন সংগ্রাম ও লড়াই করেছি, এটা মুহূর্তের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে— এমনটা মনে করার কোনো কারণ নেই।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা এখন রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের কথা বলছি, একইসঙ্গে অর্থনৈতিক কাঠামোর কথাও বলছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের সব অনাচার, অবিচার, নৈরাজ্য, দুর্নীতি ও স্বৈরাচার— সবকিছু কাটিয়ে একদিনে সুন্দর করে একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করব, এটা মনে করার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। যে ৫২ বছরে একটা নিয়মিত ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিধান আমরা তৈরি করতে পারিনি, সেখানে আজ হঠাৎ করে মুহূর্তের মধ্যে আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারব না। আমরা যারা রাজনীতি করছি, তারা চেষ্টা করছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা জোড়াতালি দিয়ে কোনোকিছু করা যায় না। এর জন্য সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা ও লক্ষ্য প্রয়োজন। পাশাপাশি, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরও আন্তরিকতা থাকতে হবে।’
এ সময়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। এই কাঠামো বদলাতে হবে। কারণ, বেগুন গাছ লাগিয়ে আমরা কমলালেবু আশা করতে পারি না। কাজেই আমাদের সামনে একটা সুযোগ এসেছে, সেটা যদি কাজে লাগাতে পারি, বৈষম্যহীন একটা সমাজব্যবস্থার কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি, তাহলে হয়তো-বা অভ্যুত্থানের কিছুটা মূল্য আমরা পাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে আমলারা। সেখান থেকে সবকিছু নেমে আসে। একজন স্কুলশিক্ষককেও নিজের সমস্যা সমাধান করতে ঢাকায় আসতে হয়, যেটার কোনো প্রয়োজন নেই। এর জন্য তো জেলা পরিষদই যথেষ্ট হওয়ার কথা। কিন্তু ওই যে সিস্টেম। কারণ, তারা যদি ঢাকায় না আসেন, তাহলে ঘুষ আসবে কোথা থেকে? এখন স্কুলশিক্ষক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক— সব নিয়োগ হয় ঘুষের বিনিময়ে। যেই রাষ্ট্রকাঠামোতে এমন বৈষম্য চলতে থাকে, সেখানে রাতারাতি কিছু করে ফেলতে পারব না।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ। সেমিনারটির সঞ্চালনা করেন অর্পণ আলোক সংঘের চেয়ারম্যান বীথিকা বিনতে হোসাইন।