Logo
Logo
×

রাজনীতি

আড়াই মাসে এনসিপির ২৬ নেতার পদত্যাগ

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম

আড়াই মাসে এনসিপির ২৬ নেতার পদত্যাগ

এনসিপির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

গঠনের পর গত আড়াই মাসে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে অন্তত ২৬ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। গত ১ জুন থেকে ৩৩টি জেলা ও প্রায় ২০০টি উপজেলায় সমন্বয় কমিটি গঠন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের হাতে গঠিত এ রাজনৈতিক দলটি।

কিন্তু দলীয় কর্মকাণ্ডে হতাশা, অনিয়মের অভিযোগ, না জানিয়ে পদায়ন বা অন্য দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততাএমন নানা কারণ দেখিয়ে গত আড়াই মাসে এই ২৬ নেতা পদত্যাগ করেন।

গত ১০ আগস্ট ‘জুলাই বিপ্লবের নীতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী’ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন এনসিপির ফরিদপুরের সমন্বয় কমিটির সদস্য মো. রুবেল মিয়া ওরফে হৃদয়।

পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দলের কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ, দলের কার্যক্রম সিদ্ধান্ত এবং অবস্থানগুলো জুলাই বিপ্লবের নীতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী বলে মনে হওয়ায় এবং দলটির বর্তমান পথচলা আমার ব্যক্তিগত আদর্শ ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায়, আমি গভীরভাবে হতাশ ও বিচলিত। আমি আর দলের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারছি না।

এর একদিন আগে শিবচর উপজেলা সমন্বয়ক কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী শাকিল খান, সদস্য মো. রিয়াজ রহমান, সদস্য মহিউদ্দিন ও সদস্য কাজী রফিক পদত্যাগ করেন।

তাদের অভিযোগশিবচর থানায় দল পরিচালনার দায়িত্ব কিছু অযোগ্য ও বিতর্কিত ব্যক্তির হাতে দেওয়া হয়েছে। যারা আদর্শিক, নৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে সম্পূর্ণ অযোগ্য। এর ফলে দলের প্রকৃত, নিষ্ঠাবান ও ত্যাগী কর্মীরা যথাযথ মর্যাদা ও মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এর আগে ৮ আগস্ট চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা সমন্বয় কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়ককারী এ ইউ মাসুদ (আরফান উদ্দিন)। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর বরাবর চিঠিতে লিখেন, কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির একক সিদ্ধান্তে কোনো ধরনের আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়া এই কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।

আগস্ট ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগ করেন দলটির শরীয়তপুর জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলামসদস্য মো. পলাশ খানব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এই দুই নেতা পদত্যাগ করেন

১৮ জুলাই ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন ইসমাইল হোসাইন ও ইঞ্জিনিয়ার আলাউদ্দিন। পদত্যাগের স্ট্যাটাসে ইসমাইল হোসাইন বলেন, ‘আমি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পরিবারের লোক। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করায় মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। এনসিপির উপজেলা কমিটিতে আমাকে রাখার বিষয়ে পূর্বে অবগত করা হয়নি, এমনকি আমি তাদের কোনো কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করিনি। তাই আমি পদত্যাগ করেছি।’

১২, ১৩ ও ১৪ জুলাই সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী রুহুল আমিন, সদস্য মো. শাহেদ আহম্মেদ এবং গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটির সদস্য ফাহিম আহমদ ও যুগ্ম সমন্বয়কারী নাদিম মাহমুদ পদত্যাগ করেন। না জানিয়ে কমিটিতে রাখা, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তারা পদত্যাগ করেন। এই দুই উপজেলার কমিটি থেকে ২০ জুলাই আরো চার নেতা পদত্যাগ করেন। তারা হলেন যুগ্ম সমন্বয়কারী এনামুল হক মারুফ, সদস্য তরিকুল ইসলাম, কিবরিয়া আহমদ ও কামরুল হাসান।

২৯ জুন চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এনসিপির সমন্বয় কমিটি গঠনের পরপরই পদত্যাগ করেন কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী হেলাল উদ্দিন। কমিটির প্রধান সমন্বয়ককে ‘জাতীয় পার্টির নেতা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী নেতাদের সহযোগী’ আখ্যা দিয়ে কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

এর চারদিন আগে ২৫ জুন সংবাদ সম্মেলন করে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা এনসিপির সমন্বয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন তিন সদস্য তৌফিক হাসান, মোক্তাদি কেমি ও জাহাঙ্গীর আলম জাকির। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা পদত্যাগ করেন।

১৯ জুন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা কমিটি থেকে ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন হাফিজুর রহমান। এর আগের দিন রাতে একই কারণ দেখিয়ে আরও তিন সদস্য পদত্যাগ করেন। তারা হলেন হাদিউজ্জামান (রাফি), ফুয়াদ হাসান (গানিম) ও রাফিউল ইসলাম। এ সময় সদস্য রাফি জানান তাকে না জানিয়ে কমিটিতে নাম দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে নিজের নাম দেখে বিস্মিত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে ফুয়াদ হাসান বলেন, তিনি বিএনপি পরিবারের সদস্য। এনসিপির কমিটিতে থাকার বিষয়ে আপত্তি জানালেও তাকে সদস্য করা হয়েছে। এ জন্য পদত্যাগ করেছেন।

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন