খালেদা জিয়ার মুক্তি-দুর্নীতি-ভারত ইস্যু
রোডমার্চ, লংমার্চ, সমাবেশের চিন্তা বিএনপি ও সমমনাদের
নতুন করে আন্দোলনে নামার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। নতুন কর্মসূচি হিসেবে বিএনপিকে রোডমার্চ, লংমার্চ ও সমাবেশের প্রস্তাব দিয়েছে সমমনা দল ও জোটগুলো। শুক্রবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানকার্যালয়ে সমমনা লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কয়েকজন নেতা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, দুর্নীতিবিরোধী, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধি এবং ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতাসহ জনসম্পৃক্তমূলক ইস্যুতে আন্দোলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের যেসব এলাকা দিয়ে ভারতের রেলগাড়ি চলাচল করবে-সেসব এলাকায় রোডমার্চ ও লংমার্চ কর্মসূচি দেয়ার জন্য সমমনা দলগুলোর নেতারা মত দিয়েছেন। চলতি মাসেই এই কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি কর্মসূচিগুলো যুগপৎভাবে কিংবা একমঞ্চে করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, সামনে যুগপৎ আন্দোলনের অন্য শরিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে। সেখানে চূড়ান্ত কর্মসূচি নির্ধারিত হবে। এরপর সব দল ও জোটের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলের দু’জন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভারতের সঙ্গে রেল করিডোর চুক্তির ইস্যুতে রোডমার্চ কর্মসূচি দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই কর্মসূচি জুলাই মাসেই দেওয়ার কথা রয়েছে। এতে যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে, বিশেষ করে জামায়াত নেয়ার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এবিষয়ে বিএনপি তাদের পক্ষ থেকে কিছু বলেনি। দলটি তাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এবিষয়ে আলোচনা করবে।
বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামীদিনে কী কর্মসূচি পালন করা যায়, সেবিষয়ে আমরা মতবিনিময় করেছি। আর এসব বৈঠকের পর আগামী দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে এসব দল ও জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বসে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
নজরুল ইসলাম খান জানান, এখনো কোনো কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়নি। মতামত নেওয়া হচ্ছে। সব মতামত নেয়ার পরে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। খুব শিগগিরই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে ।
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, দুর্নীতি, ভারতের সঙ্গে চুক্তি, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনে এসব বিষয়ে কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে গতিশীল ও বেগবান করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। স্ব স্ব অবস্থান বা যুগপৎ আন্দোলন দিয়ে আন্দোলনে সফলতা সম্ভব নয় বলেও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানান ইরান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রানজিটের মোড়কে ভারতকে করিডোর দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব খর্ব করেছেন বলেও বৈঠকে উল্লেখ করা হয়েছে -জানিয়ে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বৈঠকে বলা হয়- ভারতীয় আধিপত্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম জোরদার করার বিকল্প নেই।