উৎসবের আমেজে ডাকসু ভোট, শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন দিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রে ছিল প্রাণবন্ত উৎসবের আমেজ। ছয় বছর পর আয়োজিত এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।
শামসুন নাহার হলের আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউ ল্যাব কেন্দ্রে রয়েছে ৪ হাজার ৯৬ জন ভোটার। প্রায় ৪০ হাজার ভোটারের এই নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
মিরপুর থেকে ভোট দিতে আসেন ২০২০-২১ সেশনের অনাবাসিক শিক্ষার্থী শেখ অহোনা। তিনি বলেন, “এই প্রথম কোনো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে কোনো বাধা ছাড়াই ভোট দিতে পেরেছি। আশা করছি সুষ্ঠুভাবে ফলাফল প্রকাশ হবে।”
একই সেশনের ফারহানা তাসনিম বলেন, “আমাদের প্রথম ডাকসু নির্বাচন। সামনের বছরও ভোট দিতে পারব আশা করি। তবে আসার পথে বাস দেরি করায় একটু কষ্ট হয়েছে, কিন্তু ভোট দিতে পেরে আনন্দ লাগছে।”
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে ফারিয়া ডাকসু ভোটকে জাতীয় নির্বাচনের আগে এক ধরনের অনুশীলন হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের আগে এটি ভালো প্র্যাক্টিস ছিল, আর অভিজ্ঞতাও দারুণ।”
২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী তাসনিম সিলভিয়া টুশি বলেন, “এত সুন্দরভাবে ভোট হবে—ভাবিনি। আশা করি প্রতিবছরই এমনভাবে ভোট দিতে পারব।”
এদিকে সূর্য সেন হলের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ফারুক হাওলাদার ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে তিনি ভোট দেন। ফারুক বলেন, “আমার জন্য এটা চমৎকার এক অভিজ্ঞতা। জাতীয় নির্বাচনে ব্রেইল পদ্ধতি চালু হলে আরও ভালো হবে।”
আজ সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এর মধ্য দিয়ে এক বছরের জন্য গঠিত হবে ২৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় সংসদ। পাশাপাশি ১৮টি হলে গঠিত হবে পৃথক সংসদ, যেখানে প্রতিটি হলে ১৩ জন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। ডাকসুর নির্বাচিত পাঁচজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
ভোটের দিন জুড়ে প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নতুন করে প্রাণ পেয়েছে ডাকসু নির্বাচন।