সংসদীয় সীমানা পরিবর্তন: ভাঙ্গায় মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে, হঠাৎ করেই ঢাকা-খুলনা ও ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ অংশ—মনসুরাবাদ ও হামিরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গাছ ফেলে পথ আটকে দাঁড়ান হাজারো মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, তারা এমন কিছু করতে চাননি। কিন্তু হৃদয়ের ওপর আঘাত লাগলে প্রতিবাদের ভাষা কখনো কখনো এমনই হয়ে ওঠে।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ জানান, এই অবরোধের ফলে দু’টি মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। শত শত বাস-ট্রাক আটকে পড়ায় যাত্রী ও চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দেশের ৩০০টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে একটি তালিকা প্রকাশ করে।
এই তালিকায় দেখা যায়—ফরিদপুর-৪ আসনের অন্তর্গত আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে সরিয়ে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে আগে থেকেই নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা রয়েছে।
এই পরিবর্তন অনেকের কাছে আচমকা ও বেদনাদায়ক মনে হয়েছে।
কারণ, ২০১৩ সালেও একবার ফরিদপুরের পাঁচটি আসনকে চারটিতে রূপান্তর করা হয়েছিল। সেই ক্ষত আজো অনেকের মনে টাটকা, আর এবার যেন সেই ক্ষত আরও গভীর হলো।
নতুন সীমানা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের মতামত না নিয়ে, আমাদের ভোটাধিকারকে এভাবে সরিয়ে ফেলা—এটা মানা যায় না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
একই সুর হামিরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকনের কণ্ঠে: “এই সিদ্ধান্ত ভাঙ্গাবাসীর আত্মপরিচয়ের ওপর আঘাত। আমাদের দাবির গুরুত্ব বুঝতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।
ভাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান জানান,
“মানুষের কথা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করেছি এবং খুব শিগগিরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।”
ওসি আশরাফ আরও জানান, “পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সবার সঙ্গে কথা বলছেন। বেলা ১২টার পর থেকে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসছে।”