ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আদালতের ভেতরে সাংবাদিককে মারধর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম পান্নার জামিন শুনানি শুরুর প্রাক্কালে আইনজীবীরা সময় টেলিভিশনের সাংবাদিককে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতেই মারধর করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আর আউটলুকের মুক্তাদির রশিদ রোমিওসহ অন্য সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে দেখা গেছে।
পরিস্থিতি গুরুতর হলে এবং সাংবাদিকেরা আত্মরক্ষার জন্য আদালতের সাহায্য প্রার্থনা করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩০ হাসিব উল্লাহ পিয়াস দ্রুত তার আসন ছেড়ে খাস কামরায় চলে যান। এ সময় আইনজীবীরা জোর করে সাংবাদিকদের থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ঘটনার সূত্রপাত
হেলমেট, হ্যান্ডকাফ ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে পুলিশের বাঁশি ফুঁ দিতে দিতে আদালতে হাজির করা হয় সাংবাদিক পান্নাকে। হেলমেট খোলার পরে পান্না পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার এমন কেন করছেন আমি তো আপনাদের শত্রু নই। এ সময়ে কাছে দাঁড়িয়ে থাকা আউটলুকের মুক্তাদির রশিদ রোমিও পান্নাকে জিজ্ঞেস করেন, "ভাই আপনাকে কি জেলের ভেতরে নির্যাতন করা হয়েছে?" সাংবাদিক পান্না উত্তর দেন "না।"
ঠিক এ সময়েই আইনজীবী মহিউদ্দিন মাহি মুক্তাদির রশিদ রোমিওকে কোর্ট থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য হুকুম করেন। তার প্রতি উত্তরে মুক্তাদির রশিদ রোমিও বলেন, "কোর্ট থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা কেবলমাত্র বিচারকের আছে। উনি বললে বের হয়ে যাব। উনাকে বলতে দিন।"
একথা শোনার সাথে সাথেই ওই মুক্তাদির রশিদ রোমিওকে মারতে উদ্ধত হলে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকজন সাংবাদিক কোর্টের নিয়ম রক্ষার জন্য আইনজীবীকে অনুরোধ করেন। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে, আইনজীবী সময় টেলিভিশনের সাংবাদিক আসিফ মোহাম্মদ সিয়াম মারতে শুরু করে।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন।
হঠাৎ করে আইনজীবী কর্তৃক এ ধরনের আক্রমণের পরে কোটের ভিতরে এক আইনজীবী দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। এর পরক্ষণেই আদালতের আদেশ আছে এমন কথা বলে পুলিশ কয়েকজন সাংবাদিকদের বের করে নেন।
এ সময় মহিউদ্দিন মাহিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন "শুয়োরের বাচ্চা তুই কোর্ট থেকে বের হয় । তোকে এখানেই মেরে ফেলবে।"
এ সময় কোনো পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদেরকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসেননি। একজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, "আমরা নিরুপায়। আমাদেরকে ধাক্কা মেরে চলে গেলেও আমরা কিছু আর বলতে পারি না।"
সাংবাদিক মহিউদ্দিন রিফাত বাংলা আউটলুককে বলেন, এ ধরনের ঘটনা এখন খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
আর একজন ইংরেজি দৈনিকের সাংবাদিক জানান, সাংবাদিকদের টার্গেট করা হ্যারাসমেন্ট করা অনেক পাবলিক প্রসিকিউটর ও বড় দলপন্থী আইনজীবীদের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।