Logo
Logo
×

সংবাদ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের রায় আপিলেও বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪০ এএম

তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের রায় আপিলেও বহাল

২০০৪ সালের সেই বিভীষিকাময় ২১ আগস্ট—যখন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলায় কেঁপে উঠেছিল পুরো দেশ। প্রাণ হারিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মী, আহত হয়েছিলেন শতাধিক।

সেই দিনের বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় পেরিয়ে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।

আজ বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মামলার হাইকোর্ট পর্যায়ের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামি খালাস পেয়েছেন।

এই রায় ঘোষণার সময় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত ছিল ছয় সদস্যের বেঞ্চ। তারা সর্বসম্মতভাবে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন—তবে কিছু পর্যবেক্ষণ এবং সংশোধনী যুক্ত করে।

এর আগে, ২০১৮ সালে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার রায় দিয়েছিল। তাতে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক।

এই রায়ের পর, নিয়ম অনুযায়ী, ‘ডেথ রেফারেন্স’ নামে পরিচিত হাইকোর্ট পর্যায়ের স্বতঃসিদ্ধ যাচাই শুরু হয়। পাশাপাশি, আসামিদের করা নিয়মিত ও জেল আপিলও যুক্ত হয় শুনানির সঙ্গে।

হাইকোর্ট গত বছরের ১ ডিসেম্বর সেই রায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে সব আসামিকে খালাস দেন। বিচারিক আদালতের রায় তারা অবৈধ ও ত্রুটিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেন।

এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের অনুমতি চায়। সেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ৬ দিনের শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করে।

রায়ে খালাস পাওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ জড়িতদের একটি বড় অংশ।

এছাড়া খালাস পাওয়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছেন বিএনপির নেতা তারেক রহমানসহ একাধিক পলাতক ব্যক্তি এবং ধর্মীয় সংগঠনের সংশ্লিষ্টরা।

হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে নানা বিতর্ক, প্রতিক্রিয়া এবং জনমত গড়ে উঠেছিল। সেই রায়ের ওপর ভর করেই আপিল বিভাগ আজ সিদ্ধান্ত জানালেন—আইন ও সংবিধানের আলোকে বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি অধ্যায়ের ইতি টানলেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় শুধু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেই নয়, দেশের বিচারিক ইতিহাসেও একটি বড় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

তবে এ রায় নিয়ে এখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে মতভেদ স্পষ্ট, এবং এই মামলার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বিবর্তিত হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন