বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মনোনীত হলেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত হয়েছেন অভিজ্ঞ কূটনীতিক ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, ভার্জিনিয়ার এই কূটনীতিককে রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
একই ঘোষণায় আরও কয়েকটি দেশের জন্য নতুন রাষ্ট্রদূত ও কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসকে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত এবং সার্জিও গোরকে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সব নিয়োগ সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষে চূড়ান্ত হবে।
ক্রিস্টেনসেন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিসের সিনিয়র সদস্য। তাঁর পেশাগত জীবনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ নানা পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যত দূতাবাস আমেরিকান ইনস্টিটিউট ইন তাইওয়ান-এর পরিচালক ছিলেন। এর আগে তিনি একই প্রতিষ্ঠানের উপপরিচালক এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের তাইওয়ান সমন্বয় অফিসের পরিচালক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগদানের আগে তিনি বিমানবাহিনীতে ক্যাপ্টেন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে পরিবেশ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শদাতা ছিলেন তিনি। এ সময় তিনি বার্ড ফ্লু, এইচআইভি/এইডস এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কর্মী গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেন। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর অলিম্পিয়া স্নোর দলে কংগ্রেসনাল ফেলো হিসেবে কাজ করেন। তাঁর কর্মজীবনে বেইজিং, হংকং, দক্ষিণ আফ্রিকা ও হাওয়াইসহ বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তাঁর শিক্ষাজীবনও সমৃদ্ধ। ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন ব্রিগহাম ইয়ং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চীনা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পূর্ব এশিয়ান স্টাডিজে স্নাতকোত্তর এবং ওরিগন স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেন্টাল মেডিসিনে ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি ডেনিশ–আমেরিকান শিল্পী সিসিএ ক্রিস্টেনসেনের প্রপৌত্র।
ঢাকায় তাঁর নতুন দায়িত্ব নেওয়াটা এক অর্থে প্রত্যাবর্তন। কারণ ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলর হিসেবে কাজ করেছেন।
কূটনৈতিক জীবনে তাঁর অর্জনের মধ্যে রয়েছে তাইওয়ান সরকারের দেওয়া সম্মাননা গ্র্যান্ড মেডেল অব ডিপ্লোমেসি এবং প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের প্রদান করা অর্ডার অব দ্য ব্রিলিয়ান্ট স্টার। ২০২১ সালে তিনি তাইওয়ানের ন্যাশনাল সান ইয়াত-সেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেটও পান।
তাঁর মনোনয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আরও কয়েকজনকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত এবং বিচারপতি হিসেবে মনোনীত করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিয়োগ হলো জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের উপ–রাষ্ট্রদূত হিসেবে ট্যামি ব্রুস, ভারতে সার্জিও গোর, বাহরাইনে স্টেফানি হ্যালেট, জর্ডানে জেমস হোল্টসনাইডার এবং আইসল্যান্ডে উইলিয়াম লং। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বিচারপতির পদেও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কয়েকজনকে।
সব মনোনয়ন এখন সিনেটের অনুমোদনের অপেক্ষায়। অনুমোদন মিললেই ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।