সিজিএসের প্রতিবেদন
জুলাইয়ে ২৯৬টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত, রাজনৈতিক বিষয়ই সর্বাধিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪:০২ পিএম
-68b029204d434.jpg)
জুলাই মাসে দেশে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুয়া তথ্য শনাক্ত করেছে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। এর মধ্যে বেশিরভাগ তথ্যই রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সিজিএসের ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই মাসে মোট ২৯৬টি ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২২০টি ছিল রাজনৈতিক, যা মোট ঘটনার প্রায় ৭৪ শতাংশ। বাকি ভুয়া তথ্যের মধ্যে ছিল ২৮টি অনলাইন গুজব, ২১টি বিনোদন, ১৩টি ধর্মীয়, ৬টি অর্থনৈতিক, ৫টি কূটনৈতিক এবং ৩টি পরিবেশসংক্রান্ত।
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, জুন মাসে ভুয়া তথ্যের ঘটনা ছিল ৩২৪টি। জুলাইয়ে তা কিছুটা কমলেও রাজনৈতিক ভুয়া তথ্যের আধিপত্য রয়ে গেছে। জুনে ৩২৪ ঘটনার মধ্যে ২৫৩টি (৭৮ শতাংশ) ছিল রাজনৈতিক, আর জুলাইয়ে তা ছিল ২২০টি (৭৪ শতাংশ)।
প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্যের মূল লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছেন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নেতারা, তাদের লক্ষ্য করে সংঘটিত ঘটনার সংখ্যা ৬৬টি। এসব ভুয়া তথ্যের আরও লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক দল (৬৫টি), আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (৪১টি), তারকা ব্যক্তিত্ব (২৩টি), ধর্ম (১২টি), সরকারি প্রতিষ্ঠান (১৩টি), অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (১০টি), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (৩টি) এবং ধর্মীয় নেতা (২টি)।
তবে, ৬১টি ঘটনা অনির্দিষ্ট হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করা হয়নি, বরং সামগ্রিকভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য প্রচার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জুলাইয়ে শনাক্ত হওয়া ২৯৬টি ঘটনার মধ্যে ২৮৯টি ছড়ানো হয় ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, থ্রেডস ও এক্স (টুইটার)-এর মতো প্ল্যাটফর্মে। বাকি ৭টি ছড়ানো হয় অনলাইন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে।
২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে সিজিএস বাংলাদেশে ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের প্রচার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রতিদিনের হিসেবে তা সংগ্রহ করে মাসিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে।
জুলাই মাসের ফলাফল নিয়ে সিজিএস সভাপতি জিল্লুর রহমান বলেন, জুলাই আন্দোলনের পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভুয়া তথ্যের প্রচার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য একটি গুরুতর হুমকি। গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিজিএস ভুয়া তথ্য প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকেও যৌথভাবে এবং স্বতন্ত্রভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মত দিয়েছেন তিনি।