মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ তাসনিয়ার মৃত্যু, মৃত্যু বেড়ে ৩৬

ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী তাসনিয়া এক মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত না–ফেরার দেশে চলে গেল। শনিবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৬-এ।
মাত্র ১৫ বছর বয়সী তাসনিয়া ছিলেন মাইলস্টোন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। জীবনের শেষ এক মাস তার কেটেছে হাসপাতালের বিছানায়। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বা ক্লাসরুমের দিনগুলি ছেড়ে তিনি কাটিয়েছেন যন্ত্রণায় দগ্ধ অবস্থায়। চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান, ২১ জুলাই দুর্ঘটনার পর তাসনিয়াকে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তাসনিয়ার বাবা নাজমুল ইসলাম বলেন, “তাসনিয়া আজ সকালে মারা গেছে। আমরা এখন বার্ন ইনস্টিটিউটেই আছি।”
গত ২১ জুলাই দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের এক ভবনে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় এই দুর্ঘটনায় নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। ঘটনার পরদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হয়।
বিমান দুর্ঘটনায় আহত ৫৬ জনকে নেওয়া হয়েছিল জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। তাদের মধ্যে ২০ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৪ জন, আর এখনো চিকিৎসাধীন আছেন ২২ জন। একই ঘটনায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন আরও কয়েকজন। সেখানে ১৪ জনের মৃত্যু হয়, বর্তমানে ভর্তি আছেন একজন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা গেছেন দুজন।
তাসনিয়ার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মাইলস্টোন স্কুলের সেই কালো দিনের শোক আরও গভীর হলো। দুর্ঘটনার পর এক মাসেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে শুয়ে থেকে যন্ত্রণার কাছে হার মানল ছোট্ট তাসনিয়া, যে স্বপ্ন দেখছিল বই–খাতা আর বন্ধুদের হাসিখুশি দিনগুলোতে ফিরে যাওয়ার।