ভারতে থাকা আ.লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে কী বলছে দেশটি

ছবি: সংগৃহীত
‘ভারতের মাটিতে থাকা’ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক অফিস বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এবার সেই বিবৃতিকে ভুল বলছে ভারত। আজ বুধবার (২০ আগস্ট) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে আওয়ামী লীগের সদস্যদের দ্বারা বাংলাদেশবিরোধী কোনো কার্যকলাপ বা ভারতীয় আইনের পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ভারত সরকার অবগত নয়। সরকার ভারতের মাটি থেকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার অনুমতি দেয় না। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া প্রেস বিবৃতি তাই ভুল।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভারত তার প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করে যে জনগণের ইচ্ছা এবং ম্যান্ডেট নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে এক বিবৃতিতে ভারতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় ও কার্যক্রম বন্ধের জন্য দেশটির কাছে অনুরোধ জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতিটি দিয়েছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কার্যক্রম র্নিষিদ্ধ’ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অফিস ভারতের রাজধানী দিল্লি এবং কলকাতায় স্থাপনের খবরে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপের পটভূমিতে এ ঘটনা ঘটেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মানবতাবিরোধী গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ফৌজদারি মামলা হওয়ার কারণে দলের অনেক সিনিয়র নেতা পালিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে রয়েছেন। এর আগে গত ২১ জুলাই সন্ধ্যায় একটি অখ্যাত এনজিওর আড়ালে নিষিদ্ধ দলটির কয়েকজন সিনিয়র নেতা দিল্লি প্রেসক্লাবে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁরা উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে পুস্তিকা বিতরণ করেছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন ভারতের মাটিতে থাকাকালে দলের ক্রমবর্ধমান কার্যক্রমের কথা নিশ্চিত করেছে।
সরকার মনে করে, ভারতের মাটিতে অবস্থান করে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের পলাতক নেতা-কর্মীদের আইনত অবৈধভাবে অফিস স্থাপনসহ যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যকলাপ বাংলাদেশের জনগণ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবমাননা। এ ঘটনা ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে পরিচালিত সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকিও বহন করে এবং বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে গুরুতর প্রভাব ফেলে। এটি বাংলাদেশে জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে, যা দুই নিকটতম প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নত করার জন্য উভয় দেশের চলমান প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করতে পারে।
এসব কারণে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশবিরোধী কোনো কার্যক্রম যাতে কেউ চালাতে না পারে, বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি বাংলাদেশ অনুরোধ জানায়। বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যকলাপের অনুমতি ও সমর্থন না দেওয়া এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়গুলো অবিলম্বে বন্ধ করার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়।