Logo
Logo
×

সংবাদ

এইইউডব্লিউ’র বিরুদ্ধে ইসরায়েল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ঢাকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৫ এএম

এইইউডব্লিউ’র বিরুদ্ধে ইসরায়েল সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ঢাকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও ফিলিস্তিনি জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকার ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকালে দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে দূতাবাসের বিরোধিতার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত রামাদান সম্প্রতি একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে দাবি করে বলেন, প্রতিবেদনে বিশেষ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে আগত ফিলিস্তিনি ছাত্রীদের বৃত্তির বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রথম আলোর ১৩ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বছর দেড়েক আগে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার প্রায় ২০০ ছাত্রীকে বৃত্তি দিয়েছিল চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ)। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়টির তালিকায় থাকা ছাত্রীদের মধ্যে ১৮৯ জনকে গত বছরের অক্টোবরে ভিসা অন অ্যারাইভালের অনুমতি দেয়। গাজা থেকে জর্ডান হয়ে ফিলিস্তিনি ছাত্রীদের চট্টগ্রামে পৌঁছানোর কথা ছিল এ বছরের মাঝামাঝি। কিন্তু হঠাৎ করেই গত জুনে চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন কর্তৃপক্ষকে ফিলিস্তিনি ছাত্রীদের আগমনী ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের কথা জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে ইউসুফ রামাদান বলেন, ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের এইউডব্লিউতে পাঠানো নিয়ে দূতাবাসের আপত্তির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। অতীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আফগানিস্তান ও লাওসের দুই ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাও দূতাবাসকে উদ্বিগ্ন করেছে, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা।

রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করেন, এইউডব্লিউর সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলকে সমর্থন করে, যা ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা চ্যান্সেলর চেরি ব্লেয়ার সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী এমন কিছু প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন, যেগুলো ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, যেমন বিতর্কিত গাজা রিভিয়েরা প্রকল্প।

তিনি বলেন, এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ ও দাতাদের মধ্যে থাকা ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’, ‘বায়ার এজি’ এবং ‘ডাইরেক্ট রিলিফ’ এর ইসরায়েল সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত জানান, কাতারের মতো রাষ্ট্রগুলোর সহায়তা গ্রহণে কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু যেসব প্রতিষ্ঠানের ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, তাদের অনুদান গ্রহণ গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচটি পশ্চিমা দেশ দূতাবাসকে এইউডব্লিউতে মানবিক কারণে ফিলিস্তিনি ছাত্রীদের বৃত্তির অনুমোদন দিতে চাপ প্রয়োগ করেছিল। তবে দূতাবাস এই চাপ প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ এসব দেশ এখনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি, বরং ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষা সুযোগের নামে জাতীয় মর্যাদা বা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিক্রির জন্য নয়।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এইউডব্লিউ বাদে অন্য যে কোনো বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজার নারীদেরসহ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে কোনো আপত্তি নেই। এইউডব্লিউর জন্য নির্বাচিত সব শিক্ষার্থী এখন বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আগ্রহী, যেগুলো বৃত্তি দিচ্ছে।

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন