Logo
Logo
×

সংবাদ

বিপৎসীমা উপরে তিস্তার পানি, তৃতীয় দফায় প্লাবিত লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম

বিপৎসীমা উপরে তিস্তার পানি, তৃতীয় দফায় প্লাবিত লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল

টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে লালমনিরহাট জেলার তিস্তার বাম তীরের বহু নিচু এলাকা তৃতীয় দফায় পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক হাজার মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে, চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাদের।

বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৬ মিটার—যা বিপৎসীমার চেয়ে ১১ সেন্টিমিটার বেশি। সকাল ৯টার মধ্যে সেই পানি আরও বাড়ে, বিপৎসীমার ওপর দিয়ে ১৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হতে থাকে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, “এখনও বন্যার তীব্রতা সীমিত পর্যায়ে আছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত।”

পানি বৃদ্ধির প্রভাবে লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার তীরবর্তী গ্রামগুলোতে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজানসহ বেশ কিছু গ্রাম, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈলমারী, আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন এবং সদর উপজেলার কুলাঘাট, মোগলহাটসহ বহু এলাকা ইতিমধ্যেই পানিতে ডুবে গেছে।

পানি বাড়ায় রাস্তা, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি সবকিছু ডুবে গেছে। গবাদিপশু, শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে মানুষ ভোগান্তিতে আছে। কালীগঞ্জের দক্ষিণ ভোটমারীতে সোলার প্যানেল প্রকল্প এলাকার কাছে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, প্যানেলের কারণে নদীর স্রোত বদলে গিয়ে বসত এলাকায় চাপ পড়ছে—এটি ভেঙে গেলে কালীগঞ্জ শহরই প্লাবিত হতে পারে।

পাটিকাপাড়ার দিনমজুর সামসুল আলম বলেন, “আমাদের বাড়িঘর পানিতে। পশুপাখি আর ছোট বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি, কেউ খোঁজও নেয়নি।”

 গোবর্ধনের প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুর করিম জানান, “এ নিয়ে তিনবার বন্যা দেখছি এই বছর। গবাদিপশু সামলানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”

ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, “আমার ইউনিয়নে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি। দ্রুত ত্রাণ সহায়তা দরকার।” শিঙিমারী ইউনিয়নের মজিবর রহমান জানান, সেখানে প্রায় চার হাজার মানুষ পানিবন্দি। মহিষখোচা ইউনিয়নেও অন্তত তিন হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচএম রাকিব হায়দার বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।”


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন