জুলাই আন্দোলনে হামলার আসামি পেলেন গণ-অভ্যুত্থানে সাহসী সাংবাদিকের সম্মাননা

শেখ ফয়েজ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সাহসী সাংবাদিকের সম্মাননা পেয়েছেন জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তার নাম শেখ ফয়েজ আহমেদ (৫০)। গত ৩ আগস্ট তাকে সম্মাননা দেয় বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট।
দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ ফয়েজ আহমেদ বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের ফরিদপুর জেলার সভাপতি। তিনি জেলা ক্যাব ও সমবায় ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত। পাশাপাশি তিনি ফরিদপুর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলা সংবাদ ও চ্যানেল এসের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।
গত বছরের ১০ অক্টোবর ফরিদপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন শেখ মুজাহিদুল ইসলাম। ওই মামলার ৯৭ নম্বর আসামি শহরের খোদাবক্স রোড এলাকার শেখ মানিকের ছেলে শেখ ফয়েজ আহমেদ। এটিই জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় করা ফরিদপুরের একমাত্র মামলা।
শেখ ফয়েজ ৩ আগস্ট ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ থেকে সম্মাননা পান। আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, সাংবাদিকতায় ২০২৪ সালে সাহসিকতাপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে সম্মাননাপত্র, ক্রেস্ট ও চেক দিয়েছে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট।
বিষয়টি জানার পর দুপুরে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের একটি প্রতিনিধিদল জেলার জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে এ ঘটনার লিখিত প্রতিবাদ জানান। এ সময় ফরিদপুরে জুলাই আন্দোলন করা আবরার নাদিম, কাজী রিয়াজ, সোহেল রানা, মাহমুদুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা বিতর্কিত ব্যক্তিকে দেওয়া সম্মাননা প্রত্যাহার করে জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রাখা প্রকৃত সাংবাদিকদের মূল্যায়নের দাবি জানান।
এ বিষয়ে জেলার জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, কীভাবে এই সাহসী সাংবাদিকের নামটি এল, সে ব্যাপারে তিনি অবগত নন। এ ব্যাপারে তাদের কোনো মতামতও নেওয়া হয়নি। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ আছে। জেলার সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে থেকে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ভুক্তভোগীরা তাকে গ্রেপ্তারে ঝাড়ুমিছিল ও মানববন্ধন করেন। সমবায় ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করেছিল।
এ বিষয়ে কথা বলতে শেখ ফয়েজ আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তা ছাড়া ফরিদপুর জেলা থেকে একমাত্র আবেদনকারী ছিলেন তিনি (শেখ ফয়েজ)। বিষয়টি যাচাই-বাছাই না করায় এমনটি হয়ে থাকতে পারে।’