গণ-অভ্যুত্থানে হামলা, জাবিতে ৬৪ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার, সনদ বাতিল ৭৩ জনের

গত বছরের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর সংঘটিত সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৬৪ জন বর্তমান শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা সবাই একটি নিষিদ্ধ ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, যা সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ, আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত হামলার ঘটনার পর গঠিত তথ্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সোমবার গভীর রাতে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
উপাচার্য জানান, তদন্তে ২২৯ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৩০ জন বর্তমান এবং ৯৯ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৪ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ৩৭ জনকে দুই বছরের জন্য, ৮ জনকে এক বছরের জন্য এবং একজনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৩ জনের শিক্ষাসনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে, এবং অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় ৬ জনের সনদ দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিচার করা সম্ভব নয়, তাই তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।
অভিযুক্তদের তালিকায় থাকা ৪০ জনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জন বর্তমান এবং ২০ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য এই বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুর রব জানান, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, কোনো সাক্ষ্য বা ভিডিও ফুটেজে সংশ্লিষ্টতা মেলেনি বলেই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ইতিহাসে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।