শেখ হাসিনা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার: অ্যাটর্নি জেনারেল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৬:২৯ পিএম

শেখ হাসিনা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে শেখ হাসিনার মতো কোনো স্বৈরাচারের জন্ম হয়নি। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী স্বৈরাচার।
আজ রবিবার জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য শুরুর আগে এ কথা বলেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। কোনো স্বৈরাচারকে মিথ্যার ওপর পিএইচডি করতে হলে তাকে শেখ হাসিনার কাছে শিখতে হবে। পৃথিবীর সব স্বৈরশাসকের যদি কোনো সমিতি করা হয়, শেখ হাসিনা হবেন তার সভাপতি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে আমরা স্বৈরাচার ও তার সহযোগীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল পৃথিবীর কোন স্বৈরাচারের কী পরিণতি হয়েছে, তা ট্রাইব্যুনালের সামনে তুলে ধরেন।
জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের রাষ্ট্র অনেক এগিয়েছে। আগের ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমাদের সামনে যে জুলাই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার সঠিক বিচার চাই। তবে আমরা অমানবিক বিচার চাই না।
এ সময় তিনি ইংল্যান্ডের ও লিভার ক্রোমওয়েলের বর্ণনা তুলে ধরেন। বলেন, ন্যায়বিচারের জন্য আমরা এখানে এসেছি। এমন একটি বিচার সম্পন্ন হোক, যে ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ থাকে। কেননা ইতিহাসে অনেক ফ্যাসিস্টের জন্ম হয়েছে। তবে বহু স্বৈরশাসকও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। তাদের মধ্যেই একজন ওলিভার ক্রোময়েল। যার মৃত্যুর তিন বছর পর লাশ তুলে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এরপর শিরশ্ছেদ করা হয়। তার মাথা লোহার দণ্ডে গেঁথে বহু বছর ওই শহরে প্রদর্শন করা হয়েছে। তবে আমরা তেমন কিছু চাই না।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গেল ১৬ বছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে খুন-চাঁদাবাজি, রাতে ভোট করা, বিদেশে টাকা পাচারসহ সব ধরনের অনিয়ম করা হতো। আর এসবের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলন হয়। টানা ৩৬ দিনের সেই আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনাসহ এমপি-মন্ত্রীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল।
তিনি আরও বলেন, মিথ্যা কথার জন্য পিএইচডি করতে হলে হিটলারও শেখ হাসিনার কাছে আসতেন। তবে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমাদের ক্ষোভ নেই। আমরা অপরাধের বিরুদ্ধে এসেছি। আমরা ন্যায়বিচার চাই, দেশের মানুষের স্বপ্নের বিচার চাই। ন্যায়বিচারের মধ্য দিয়েই আইনি পরিকাঠামোর মধ্যে আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চাইব। যুগ সন্ধিক্ষণে ন্যায়বিচারের জন্য দাঁড়িয়েছি। শুধু রাষ্ট্রপক্ষ নয়, সবাই ন্যায়বিচার পাবেন।
এদিন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ শুনানি শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহাম্মদ মোহিতুল হক। বিচারকাজ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।