গুলশানে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আটক ৫, উমামা ফাতেমা যা বললেন

রাজধানীর গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে মুখ খুলেছেন সংগঠনটির সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। তিনি বলেছেন, “ঠিকমতো খোঁজ নিলে বুঝবেন, এদের শেকড় অনেক গভীরে।”
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আটক পাঁচজনের ছবি-সংবলিত একটি সংবাদ কার্ড শেয়ার করে উমামা একটি পোস্ট দেন। তিনি লেখেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ৫ জনের চাঁদাবাজির খবর শুনে আমার পরিচিত ব্যক্তিবর্গ এতটাই আশ্বর্য হওয়ার অভিনয় করছেন যে, আমার মনে হচ্ছে আমিই সব থেকে কম আশ্চর্য হয়েছি।”
পোস্টে উমামা জানান, এই পাঁচজন দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের “প্রটোকল” দিচ্ছিল। তিনি লিখেছেন, “এই ছেলেগুলাকে তো নেতাদের পেছনে প্রটোকল দিতে দেখা গেছে এতদিন যাবৎ। সচিবালয় থেকে শুরু করে মিছিল-মিটিং, মারামারি—সব জায়গাতেই সমন্বয়কদের ডান হাত, বাম হাত হিসেবে ছিল তারা।”
তিনি আরও লেখেন, “গুলশান বনানী গ্যাং কালচারের অজস্র অভিযোগ অভ্যন্তরীণভাবে তাদের বিরুদ্ধে ছিল।”
আটকদের মধ্যে থাকা রিয়াদ নামে একজনের নাম উল্লেখ করে উমামা বলেন, গত ডিসেম্বরে রূপায়ন টাওয়ারে তার সামনে সে ‘উশৃঙ্খল আচরণ’ করেছিল। “আমরা মেয়েরা তাকে থামানোর চেষ্টা করলে সে আমাদের ওপর পাল্টা চড়াও হয়,” লিখেছেন তিনি। পরে খোঁজ নিয়ে উমামা জানতে পারেন, তার বিরুদ্ধে এর আগেও হুমকি, মারামারি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ছিল।
পোস্টে উমামা ফাতেমা লিখেছেন, “এই প্রথম চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তারা পুলিশের হাতে ধরা খেল। আশেপাশের সবাই এত অবাক হওয়ার ভান করছেন, বিষয়টা কিছুটা হাস্যকর। ইশ! মানুষ কত নিঃষ্পাপ! সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো আবিষ্কার করছেন আজ কীভাবে চাঁদাবাজি করল!”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “কারো দুর্নীতি বা অসততার বিষয়ে অভিযোগ জানালে পিনড্রপ সাইলেন্স উপহার পাওয়া যেত। আর আমি চোখের সামনে দেখতাম, এসব লোকজনই কীভাবে দিনশেষে এক্সেস করে নেয়।”
শেষে তিনি লিখেছেন, “আজ এত মাস পর এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে বলার ভাষা পাই না কোনো! যে যেভাবে পারছে, এই প্ল্যাটফর্মকে নষ্ট করেছে।”
উল্লেখ্য, গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন—ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন ও সাদাব, জ্যেষ্ঠ সংগঠক ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সেলের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ এবং আমিনুল ইসলাম। গুলশান থানায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে।
গত ২৭ জুন উমামা ফাতেমা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ থেকে মুখপাত্র পদ ছাড়েন। এর কিছুদিন পরেই সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সামনে এলো, যেটি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।