নির্বাচন কমিশনে জমা পড়ল বছরের আর্থিক বিবরণী
২০২৪ সালে বিএনপির আয় ১৫ কোটির বেশি, ব্যয় ৫ কোটির কম

২০২৪ পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটি জানিয়েছে, গত বছর তাদের আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, আর ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২০ টাকা। বর্তমানে দলের ফান্ডে জমা রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।
রোববার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের কাছে এই হিসাব জমা দেয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দল।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিজভী। তিনি জানান, বিএনপির আয় এসেছে সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই-পুস্তক বিক্রি, ব্যাংক সুদ এবং এককালীন অনুদান থেকে। ব্যয় হয়েছে কর্মসূচি বাস্তবায়ন, ব্যক্তিগত ও দুর্যোগকালীন সহায়তা, লিফলেট ও পোস্টার ছাপাসহ অন্যান্য খাতে।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিএনপির আয় ছিল আগের বছরের তুলনায় ১৩ গুণের বেশি। ২০২৩ সালে দলের আয় ছিল ১ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ১৫১ টাকা, যেখানে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৯৭০ টাকা।
রিজভী বলেন, “বিগত বছরগুলোতে নির্বাচন কমিশন ছিল সরকারের অধীনস্থ, মেরুদণ্ডহীন ও চাকরিলোভী লোকজন দিয়ে গঠিত। তারা দিনের ভোট রাতে করে কমিশনকে ফ্যাসিবাদের অস্ত্রে পরিণত করেছিল।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমান কমিশনের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা—তারা দায়িত্বশীল থাকবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বিগত সরকার গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। এখন জনগণ চায় ভোট দিতে, আর সেটার জন্য নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করাই নির্বাচন কমিশনের প্রধান দায়িত্ব।”
সংবিধান অনুযায়ী, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। যারা তিন বছর এই হিসাব জমা দিতে ব্যর্থ হয়, তাদের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
বর্তমানে ৫১টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত থাকলেও, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় এবছর ৫০টি দলকে চিঠি পাঠিয়েছে ইসি।
এই হিসাব দাখিলের মাধ্যমে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মানার ধারাবাহিকতা বজায় রাখল। দলটি ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলেও গত বছর তাদের আয় ও ব্যয়ের উল্লম্ফন লক্ষ্য করা গেছে—বিশেষত রাজনৈতিক কর্মসূচি ও প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে।