Logo
Logo
×

সংবাদ

কলেজছাত্র হৃদয় হত্যা মামলায় পুলিশের ২ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম

কলেজছাত্র হৃদয় হত্যা মামলায় পুলিশের ২ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

কলেজছাত্র হৃদয়। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় গত ৫ আগস্ট কলেজছাত্র হৃদয় হত্যা মামলায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রানু খন্দকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর গাজীপুরের কোনাবাড়ি থানা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সে সময় হৃদয় নামের এক কিশোরকে কয়েকজন পুলিশ ঘিরে ধরে। এক পর্যায়ে পেছন থেকে একজন পুলিশ কনস্টেবল এগিয়ে এসে হৃদয়ের পিঠে শর্টগান দিয়ে গুলি করে। সেখানেই লুটিয়ে পড়ে হৃদয়ের নিথর দেহটি। পরে সে লাশটি গুম করে ফেলা হয়। যার ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। পরে এই ঘটনায় কোনাবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা হলেও সেখানে কোনো পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়নি। তবে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন ব্যাক্তিকে আসামি করা হয়। হৃদয় হত্যার পর লাশ গুমের বিষয়টি নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান সার্চলাইটে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। তখন নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় মামলার তদন্তে। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি অনুসন্ধান শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। 

জানা গেছে, এসআই মোশারফ হোসেন ওই সময় কোনাবাড়ি থানায় সেকেন্ড অফিসারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। আর একই থানায় কর্মরত ছিলেন এএসআই রানু খন্দকার। এসআই মোশারফ হোসেন বর্তমানে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় কর্মরত আছেন। তাদেরকে মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে বুধবার (২৩ জুলাই) পুলিশ সদরদপ্তর থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। যার প্রেক্ষিতে তারা আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গেলে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, হত্যার পর হৃদয়ের লাশ পুলিশি তত্ত্বাবধানে গুম করা হয়েছে। এমনকি গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ সদস্যরা সেই লাশ গুমের বিষয়েও তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে বর্ণনা দিয়েছেন। 

তারা জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি ভাড়া করা গাড়িতে করে লাশটি নিয়ে তুরাগ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। লাশটি ফেলার পর পুলিশ সদস্যরাও সেখান থেকে পালিয়ে যান।

অন্যদিকে গাজীপুর মহানগরীর কড্ডা ব্রিজ এলাকায় তুরাগ নদীতে অভিযান চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের উপস্থিতিতে তারা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত পানির নিচে তল্লাশি চালিয়ে মরদেহের সন্ধান না পেয়ে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে ফায়ার সার্ভিস।

নিহত কলেজছাত্র হৃদয় (২০) টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমনগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি কোনাবাড়ী এলাকায় অটোরিকশা চালাতেন।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মামুন জানান, ট্রাইবুনালের নির্দেশে সকাল ১০টায় উদ্ধার অভিযান শুরু করে। নদীতে প্রচুর স্রোত থাকায় মরদেহের সন্ধান না মেলায় সমাপ্ত করা হয়। 

Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন