
সুনামগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁও সীমান্তে এক রাতেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বিজিবি জানায়, শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার উপজেলার বাগানবাড়ি সীমান্ত এবং শনিবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের মিনাপুর সীমান্তে এই দুই পৃথক ঘটনা ঘটে।
সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির জানান, দোয়ারা বাজারের বাগানবাড়ি সীমান্ত দিয়ে কিছু ব্যক্তি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে গরু আনতে যান। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন শফিকুল ইসলাম (৪৫), যিনি দোয়ারা বাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
দোয়ারা বাজার থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, শফিকুলসহ ১০-১২ জনের একটি দল সীমান্ত পেরিয়ে গরু আনতে যান। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার সঙ্গীরা তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে সেখান থেকে চলে যান। পরে স্বজনরা তাকে দোয়ারা বাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত আড়াইটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বুকে গুলির চিহ্ন ছিল বলে তিনি জানান।
এই ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে, দিনাজপুর-৪২ বিজিবির অধীনস্থ ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় মিনাপুর সীমান্তেও একই রকম এক ঘটনা ঘটে। শনিবার ভোরে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন আসকর আলী (২৪), যিনি হরিপুর উপজেলার জীবনপুর গ্রামের কানুরার ছেলে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ভোর আনুমানিক চারটার দিকে আসকর আলীসহ কয়েকজন মিনাপুর সীমান্তের ৩৫৩ নম্বর পিলার পার হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে কাঁটাতারের কাছে গেলে, ভারতের কিষাণগঞ্জ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই আসকর আলীর মৃত্যু হয়। তার মরদেহ ভারতের ভেতরে প্রায় ২০০ গজ দূরে পড়ে আছে।
বিজিবি জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উভয় সীমান্তে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহত যুবকের মরদেহ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মঈন হাসান।