‘মৌলিক সংস্কার ছাড়া ভোট হলে যারা ক্ষমতায় যাবে তারাও দানবে পরিণত হবে’

রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
জুলাই প্রক্লেমেশন এবং জাতীয় সনদ এক নয় উল্লেখ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কাজ চলছে। জুলাই মাসে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। আগামী ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।
আজ শনিবার ( ৩১ মে) দুপুরে রংপুরের আরডিআরএস মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন রংপুর বিভাগ আয়োজিত জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা বিষয়ক নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ৭২ এর সংবিধান ছিল এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা কেন্দ্রিক। শেখ হাসিনা কিন্তু ট্যাংকে চড়ে বা উর্দি পরে আসেননি। তিনি সংবিধানও বাতিল করেনি। কিন্তু যে সাংবিধানিক বিধান ছিল, যে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ছিল সেগুলোই তাকে স্বৈরাচারী করেছে। তিনি আরও কিছু আইন পরিবর্তন করে, সংবিধান পরিবর্তন করে পঞ্চদশ সংশোধনী করে পুরো সংবিধানটাকে বদলে দিয়েছিল । এর মাধ্যমে তার স্বৈরাচারী হওয়াটা আরও নিশ্চিত করেছে। সেই সংবিধানকে সংশোধন করে শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদের দানবে পরিণত হয়েছিল।
বদিউল আলম বলেন, আবু সাঈদরা প্রাণ দিয়েছিল। কারণ তারা মৌলিক কতগুলো পরিবর্তন চায়। মৌলিক সংস্কার চায়। সংস্কার ছাড়া যদি নির্বাচন হয়, তাহলে আমাদের আশংকা থেকে যায়, তাহলে আমরা আবারও পুরোনো স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পারি। শাসক যারাই হোক সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসলেও তারা দানবে পরিণত হতে পারে। এজন্যই সংস্কার প্রয়োজন।
বদিউল বলেন, এখন রাজনৈতিক দলগুলোও সংস্কারের কথা বলছেন। কেউ বেশি সংস্কারের কথা বলছেন, কেউ কম সংস্কারের কথা বলছেন, কেউ নীতিগতভাবে কতগুলো বিষয়ে একমত হচ্ছেন। কিন্তু বিস্তৃতভাবে আসতে গেলেই সেখানে অস্পষ্টতা আছে। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্য কমিশনের আলাপ আলোচনা চলছে। আমাদের আকাঙ্ক্ষা হলো আগামী মাসের মধ্যে যেটা কাল (১জুন) থেকে শুরু হবে। একটা ঐকমত্যে পৌঁছানো। কিছু মৌলিক বিষয়ে, হাজারটা বিষয়ে নয়। যেখানে সংবিধান সংশোধন লাগবে। যেখানে সংসদ সদস্যদের, রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি লাগবে। যেখানে কতগুলো স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে তাদের (রাজনৈতিক দলগুলোর) মতামত দরকার।
সুজন সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকগুলো বিষয় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সরকারের সাথে এবং ঐকমত্য কমিশনের সাথে। এগুলো সম্পর্কে যেন জনগণ সচেতন হয়, জনগণ যেন তাদের মতামত দিতে পারে। এগুলোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে লাগবে এবং সংবিধান সংশোধন হয়তো লাগবে। আমরা আশা করছি যে আগামী মাসের মধ্যে এই চুক্তিটা হবে। এবং এটা স্বাক্ষরিত হবে সেদিন, যেদিন আবু সাঈদ পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। যেদিন আবু সাঈদ বুক পেতে দিয়ে বুলেট নিয়েছিল। এবং শাহাদত বরণ করেছিল।
জুলাই প্রক্লেমেশন প্রসঙ্গে ড. বদিউল বলেন, আমি মনে করি জুলাই প্রক্লেমেশন হলো একটি ঐতিহাসিক দলিল। জুলাই সনদ আলাদা। ২৪ এর জুলাই বিপ্লবকে ঐতিহাসিক এবং আইনি কাঠামো দিতে যথা সময়েই সেটা হওয়া প্রয়োজন। এটার সাথে জুলাই সনদের কোনো সম্পর্ক নেই।