Logo
Logo
×

সংবাদ

চক্ষু ইনস্টিটিউটে উত্তেজনা অব্যাহত, দ্বিতীয় দিনেও চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ০১:২৫ পিএম

চক্ষু ইনস্টিটিউটে উত্তেজনা অব্যাহত, দ্বিতীয় দিনেও চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কর্মীদের সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের রেশ কাটেনি। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা সম্পূর্ণরূপে স্থগিত রয়েছে।

বুধবার কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে গেলে হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার সকালেও স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।

হাসপাতালের এক কর্মী আশরাফুল আলম জানান, “বুধবারের ঘটনায় পরদিন কেউ—না চিকিৎসক, না নার্স, না কর্মচারী—হাসপাতালে উপস্থিত হননি। তাই আজও কোনো চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়নি।”

সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে বুধবার সকাল ১০টার কিছু পর, যখন কর্মবিরতিতে থাকা কর্মীদের সঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন কয়েকজন জুলাই যোদ্ধা এবং রোগীদের স্বজনদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা থেকে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সেনা সদস্যরা এসে বিকেল নাগাদ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন।

আশরাফুল আলম আরও বলেন, “গতকাল আমাদের চিকিৎসকদের ওপর হামলা করা হয়েছে—যাঁরা ১১ মাস ধরে ওদের সেবা দিয়ে আসছেন। স্টাফদেরও মারধর করা হয়েছে। রড, লাঠি, সবকিছু তারা আগেই নিয়ে আসে। এমনকি পঙ্গু অবস্থায় থেকেও অনেকে সংঘর্ষে অংশ নেয়। উপর মহলের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমরা কাজ শুরু করব না।”

হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সেবিকা সেলিনা বেগম জানান, “আমি সকালে কয়েকজন নার্সের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রধান ফটক বন্ধ পাওয়া যায়। নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা আমাদের ঢুকতে দেননি। পরে আমাদের ফিরে যেতে হয়।”

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, “হাসপাতাল আপাতত বন্ধ রয়েছে, কোনো কার্যক্রম চলছে না। এর বেশি বলার কিছু নেই।”

গত রোববার, উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে হাসপাতালে ভর্তি থাকা চারজন আহত জুলাই যোদ্ধা বিষপান করেন। পরে তাঁদের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার, চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তাঁরা সহযোদ্ধাদের সঙ্গে ফিরে এসে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষ ঘিরে রাখেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেনা সদস্যদের সহায়তায় পরিচালক মুক্ত হন।

এ সময়, পুলিশ জানায়, আন্দোলনকারীদের কয়েকজন নিজের গায়ে দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে আগুন লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঘটনার পর কর্মীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেন।

বুধবারের সংঘর্ষে শুধু হাসপাতালের কর্মীরা নয়, আহত জুলাই যোদ্ধা ও চিকিৎসা নিতে আসা অন্যান্য রোগীর স্বজনরাও জড়িয়ে পড়েন। এক চিকিৎসক জানান, জুলাই যোদ্ধারা হাসপাতালের আবাসিক এলাকায় গিয়েও হামলা চালান এবং কর্মীদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন।

হাসপাতাল এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং পরিষ্কারভাবে বলা যাচ্ছে না কবে নাগাদ চিকিৎসাসেবা স্বাভাবিক হবে।


Logo

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন