যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহার খালাস

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সংঘটিত মানবতাবিরোধী কার্যকলাপের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পেয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে আজহারুলের দাখিল করা আপিল সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
এই মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড এবং আপিল বিভাগ কর্তৃক পূর্বে তা বহাল রাখার সিদ্ধান্তটি বাতিল বলে ঘোষিত হয়েছে। অন্য কোনো মামলায় অভিযুক্ত না হলে, আজহারুলকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কিত মানবতাবিরোধী কোনো মামলায় রায় পর্যালোচনার (রিভিউ) পর উচ্চ আদালতে আপিলে খালাস পাওয়া এটিই প্রথম ঘটনা।
এই আপিলের শুনানি শেষে গত ৮ মে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার জন্য ২৭ মে নির্ধারণ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের কার্যতালিকার শীর্ষে ছিল মামলাটি। আজ সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে আদালত রায় ঘোষণা করে।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুলকে যুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি আপিল দায়ের করেন। শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর আপিল বিভাগের পক্ষ থেকে রায় প্রদান করা হয়।
২০২০ সালের ১৫ মার্চ প্রকাশিত হয় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়। সেই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের মাধ্যমে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই পুনরায় আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হন আজহারুল।
রিভিউ আবেদন শুনানি শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালত ‘লিভ টু আপিল’ মঞ্জুর করে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে সংক্ষিপ্তসার জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিবরণী জমা দিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং আজ চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধ সংশ্লিষ্ট অভিযোগে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে আজহারুলকে আটক করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি রয়েছেন।
আদালতে আজহারুলের পক্ষে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এবং সহকারী আইনজীবী ছিলেন সৈয়দ মো. রায়হান উদ্দিন। রাষ্ট্রের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।