সংগীতশিল্পী নোবেল গ্রেপ্তার, সাত মাস ধরে অবরুদ্ধ রেখে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে

সংগীতাঙ্গনের পরিচিত মুখ মাঈনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এক তরুণীকে দীর্ঘ সাত মাস একটি ফ্ল্যাটে আটকে রেখে যৌন সহিংসতা এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
ডেমরা থানার ইনচার্জ মাহমুদুর রহমান জানান, জাতীয় হেল্পলাইন ‘৯৯৯’-এ আসা ফোন কলে সাড়া দিয়ে পুলিশ সোমবার রাতে একটি বাড়িতে অভিযান চালায় এবং ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে। একই অভিযানে নোবেলকেও আটক করা হয়।
এই তথ্য প্রথমে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণসংযোগ ইউনিট থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় এবং পরবর্তীতে ডেমরা থানাও বিষয়টি নিশ্চিত করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ইডেন কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে গুলশানে দেখা করার আমন্ত্রণ জানিয়ে ডেকে নেন নোবেল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পরে তাকে ডেমরার একটি বাসায় আটকে রাখা হয়, যেখানে তার ওপর মানসিক এবং শারীরিক নিপীড়ন চালানো হয় বলে অভিযোগ।
ওসি জানান, নোবেল অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বেশ কিছু ভিডিও নিজ মোবাইল ফোনে ধারণ করেন এবং সেগুলো ব্যবহার করে তাকে ভয়ভীতি ও চাপে রাখেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীকে সিঁড়ি দিয়ে জোরপূর্বক নিচে নামাচ্ছেন নোবেল। পরবর্তীতে জানা যায়, ভিডিওতে যিনি আছেন তিনিই সেই অভিযোগকারী নারী। ভিডিও দেখে মেয়েটির অভিভাবকরা ঢাকায় এসে পুরো বিষয়টি অবগত হন এবং ৯৯৯-এ ফোন করেন।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাত ১০টার দিকে ওই ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নোবেল পালিয়ে গেলেও, পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাত ২টার দিকে তাকে আটক করা সম্ভব হয়।
গ্রেপ্তার এড়াতে নোবেল দেশত্যাগের ছক আঁটছিলেন বলে জানায় পুলিশ। এজন্য একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
ওসি মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, শারীরিক সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এছাড়াও, অবৈধভাবে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার কারণে পর্নোগ্রাফি আইনে আলাদা অভিযোগ আনা হয়েছে।