ছয় দফা দাবিতে ‘শাটডাউন’: ঢাকা পলিটেকনিকে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে তালা ঝুলিয়ে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রবেশপথে তালা লাগিয়ে সব ধরনের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
শুধু ঢাকা নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটেও একই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্ম।
ঢাকা পলিটেকনিক ক্যাম্পাসে তালা ঝোলানোর পর মেধা শহীদ চত্বরে আন্দোলনকারীদের পক্ষে ব্রিফ করেন মাশফিক ইসলাম দেওয়ান। তিনি বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ আমাদের দাবির রূপরেখা প্রণয়নের জন্য কমিটি করলেও এখন পর্যন্ত একটি মাত্র বৈঠক হয়েছে। আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। দ্রুত কাজ এগোচ্ছে না, এমনকি কোনো আপডেটও দিচ্ছে না।”
তিনি আরও জানান, রূপরেখা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ‘শাটডাউন’ চলবে। প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন তালাবদ্ধ থাকবে এবং ক্যাম্পাসের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এর আগে রবিবার ও সোমবার শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে এবং ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস বাংলাদেশ (আইডিইবি) কার্যালয়গুলোর সামনে নিজেদের দাবিসমূহ তুলে ধরেন।
গত সপ্তাহজুড়ে লাগাতার কর্মসূচি চলার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করলে ২২ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেছিল। তবে পরদিনই তারা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পুনরায় আন্দোলনে ফেরার ঘোষণা দেয়।
শিক্ষার্থীদের প্রধান ছয় দফা দাবি হলো:
ক্রাফট ইন্সট্রাকটর ইস্যু: জুনিয়র ইন্সট্রাকটর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাকটরদের প্রমোশনের হাইকোর্টের রায় বাতিল এবং বিতর্কিত নিয়োগ বিধি দ্রুত বাতিল করে দোষীদের স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা।
ডিপ্লোমা কোর্সের মেয়াদ: ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের চার বছরের মেয়াদ অক্ষুণ্ন রাখা এবং আধুনিক বিশ্বের আদলে নতুন সিলেবাস ও কারিকুলাম প্রণয়ন।
চাকরি সংরক্ষণ: উপ-সহকারী প্রকৌশলী (১০ম গ্রেড) পদে শুধুমাত্র চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণ ও ন্যূনতম বেসিক ১৬০০০ টাকা বেতন নির্ধারণ।
কারিগরি নেতৃত্ব: কারিগরি শিক্ষা সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করা।
নিয়োগ বিধি সংশোধন: বিতর্কিত সব নিয়োগ বিধি সংশোধন করে পলিটেকনিক ও টিএসসিতে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগ।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ: ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, নড়াইল ও খাগড়াছড়িতে প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শতভাগ আসন নিশ্চিত করা।