শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্থবহ ও টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত: ড. ইউনূস

ইউএনবি
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩১ পিএম

বৈশ্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতাদের অবশ্যই একত্রিত হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘মিয়ানমারের দীর্ঘস্থায়ী সংকট আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে— যার কারণে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উল্লেখযোগ্য ক্ষতি রয়েছে। সংহতির নিদর্শন হিসেবে সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বৈশ্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতাদের অবশ্যই একত্রিত হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকের সংকটপ্রবণ বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাত অধিকার খর্ব করে এবং অর্থনীতিকে ব্যাহত করে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা যেকোনো অর্থবহ ও টেকসই উন্নয়নের মৌলিক পূর্বশর্ত। ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা পর্যন্ত যে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে, তা বিশ্বের উপেক্ষা করা উচিত নয়।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচারহীনতা এবং মানবাধিকারের প্রতি নির্লজ্জ অবজ্ঞা বিশ্বের যেকোনো দেশের উন্নয়নের জন্য হুমকি। ফিলিস্তিনে চলমান দুর্দশা কেবল একটি অঞ্চলকে নয়, পুরো মানবতাকে উদ্বিগ্ন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আমরা সবার জন্য একটি স্থিতিস্থাপক, সমৃদ্ধ ও টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি, তবে বিভিন্ন হুমকি রয়েছে, যা আমাদের ভবিষ্যতের উন্নয়নকে লাইনচ্যুত করতে পারে। আমরা গভীর অনিশ্চয়তার সময়ে বাস করছি, যেখানে বহুপাক্ষিকতা মারাত্মক হুমকির মুখে। জলবায়ু পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে এবং মানবিক সংকট গভীর হচ্ছে। উদীয়মান নিয়ম, প্রযুক্তি ও শাসন মডেলগুলো বিশ্বকে দ্রুত নতুন আকার দিচ্ছে; অতীতের অনেক অনুমানকে অপ্রচলিত করে তুলছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার নবায়নযোগ্যতার তাগিদ কখনও এতটা ছিল না।’
দোহায় আজ (মঙ্গলবার) শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী দ্বিতীয় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।
এই শীর্ষ সম্মেলন এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও উদ্ভাবনী পন্থাগুলো আধুনিক টেকসই উন্নয়নে কীভাবে অবদান রাখতে পারে, তা অনুসন্ধান করা হয়, যা একটি আরও সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়তা করবে।