Logo
Logo
×

সংবাদ

অর্থ পাচার তদন্তের আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের ফ্ল্যাট নিয়ে অনুসন্ধান

ডেস্ক রিপোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৯ এএম

অর্থ পাচার তদন্তের আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনের ফ্ল্যাট নিয়ে অনুসন্ধান

ব্রিটিশ লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের মালিকানাধীন ৭ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থে কেনা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে টিউলিপ সিদ্দিক, তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুদক। সেই তদন্তের আওতায় ফ্ল্যাট কেনার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।

এই অভিযোগের মধ্যে গত মাসে টিউলিপ সিদ্দিককে ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। তাছাড়া, টিউলিপের লন্ডনের রাজনীতিতে তার খালা শেখ হাসিনার সংশ্লিষ্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, যে কারণে কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রিটিশ তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন টিউলিপ।  

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও অভিযোগ

শেখ হাসিনা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত ৫ আগস্ট বিতাড়িত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন এবং বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছেন। তার শাসনামলে বিরোধীদের উপর দমন-পীড়ন, গ্রেপ্তার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছিল। একই সাথে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।  

দুদক ধারণা করছে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থের মাধ্যমে লন্ডনে বিলাসবহুল সম্পত্তি কেনা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট ছাড়াও, তার পরিবারের অন্য সদস্যদের উত্তর লন্ডনে সাড়ে ৬ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট এবং ১৫ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ডের আরেকটি সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

অর্থ পাচারের অভিযোগ

তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অবৈধ অর্থ স্থানান্তর করে পরে লন্ডনের এই সম্পত্তি কেনা হয়েছিল। দুদকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন,  "গোপন তদন্তে অভিযোগগুলি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমরা এর একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"  

তিনি আরও যোগ করেন,  "টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি ও আর্থিক অসদাচরণের অভিযোগে জড়িত বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যুক্ত হয়ে অর্থ পাচার ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সাথে সম্পর্কিত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।"  

সময়রেখা ও লেবার পার্টির প্রতিক্রিয়া

এসব অভিযোগের বিষয়ে লেবার পার্টির এক সূত্র জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক ২০০৪ সালে লন্ডনের ফ্ল্যাটটি পেয়েছিলেন, যার দাম বর্তমানে ৭ লাখ পাউন্ড। ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির সাথে এটি যুক্ত করা সম্ভব নয়।

টিউলিপ সিদ্দিকের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র বলেছে, "সময়রেখা অনুযায়ী এই অভিযোগের ভিত্তি নেই। টিউলিপের কোনো বিদেশি সম্পত্তি বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই।" 

রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ও ২০১৩ সালের বৈঠক  

২০১৩ সালে শেখ হাসিনার সাথে টিউলিপ সিদ্দিক মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই বৈঠকের পর, রাশিয়া পদ্মা নদীর তীরে ১০ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়।

দুদক অভিযোগ করছে,  "মিসেস সিদ্দিক চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং তার পরিবারকে প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করতে সাহায্য করেছিলেন।"  

দুদক আরও জানিয়েছে, তারা অন্যান্য বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পের তহবিল অপব্যবহারের বিষয়েও তদন্ত করছে, যেখানে কোটি কোটি ডলার বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।  

টিউলিপ সিদ্দিকের প্রতিক্রিয়া

টিউলিপ সিদ্দিকের একজন মুখপাত্র বলেন, "এই অভিযোগের পক্ষে একেবারেই কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এই বিষয়গুলিতে টিউলিপ সিদ্দিকের সাথে দুদক থেকে যোগাযোগ করা হয়নি। টিউলিপ এই দুদকের এই দাবিগুলি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।"

Logo

প্রধান কার্যালয়: ৬০৯০ ডাউসন বুলেভার্ড, নরক্রস, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন