
ইসহাক আলী খান পান্না। ছবি: সংগৃহীত
সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় নিহত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্নার মৃতদেহ উদ্ধারের কথা স্বীকার করেছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য সরকার। স্বীকার
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌহাটির বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহকারী কমিশনার রুহুল আমিন।
তিনি জানান, মেঘালয় রাজ্য সরকার একটি মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে; যার পকেটে একটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। পাসপোর্টটি ইসহাক আলী খান পান্নার।
এছাড়া পান্নার নিকটাত্মীয় দুজন আজ মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়াং থানায় গেলে সেখানে পেট্রল পুলিশের মাধ্যমে নিশ্চিত হয় মৃতদেহ উদ্ধারের কথা। এ সময় তার হাতে থাকা ঘড়ি ও পাসপোর্ট তাদের দেখানো হয়।
গত শুক্রবার রাতে কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় ভারতীয় এলাকায় মারা যান পান্না। পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ। এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন মেঘালয় রাজ্যের বিএসএফ ও পুলিশ। এমনকি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পান্না ভারতে প্রবেশই করেনি বলে বিবৃতি দেন বিএসএফ কর্মকর্তারা।
গত ৫ আগস্ট প্রবল ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন পান্না। সেদিনই তার পিরোজপুর শহরের পাড়েরহাট সড়কের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পান্নার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার বেকুটিয়া গ্রামে। তবে গ্রামের বাড়িতে তার যাতায়াত তেমন নেই। পিরোজপুরে গেলে শহরের বাড়িতেই থাকতেন তিনি।
পান্নার স্ত্রী আইরীন পারভীন বাঁধন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৪৫ বছর বয়সে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল মারা যান। আইরিন সরকারের উপ-সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হলের ভিপি ছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর পান্না আর বিয়ে করেননি। এই দম্পতির ইফতেশাম আফতারি আরিয়ান নামক এক ছেলে রয়েছে। তবে ওই সন্তান পালিত বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের ১৯৯৪ সালের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পান্না। ওই সম্মেলনে সভাপতি হন একেএম এনামুল হক শামীম। শামীম পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একাধিকবার এমপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের উপমন্ত্রী হলেও পান্না বরাবরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বাইরে ছিলেন। যদিও ২০১২ সালের সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং পরে বিভিন্ন উপ-কমিটির সদস্য হয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগপর্যন্ত ছিলেন পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ২০০৮ সালের নির্বাচনে অবশ্য পিরোজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন পান্না। অবশ্য পরে ১৪ দলীয় জোটগত নির্বাচনের কারণে সরে যেতে হয় তাকে।